সর্বশেষ

সারাদেশ

চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বাবলার আসল পরিচয় কি  

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

বৃহস্পতিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২৫ ৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে সক্রিয় এই বাবলা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, একসময় আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন খানের সহযোগী ছিলেন বাবলা। তবে পরবর্তীতে গুরু সাজ্জাদের সঙ্গে বিরোধের জেরে তিনি নিজস্ব একটি দল গঠন করেন। সেই সময় সাজ্জাদের অনুসারী ‘ছোট সাজ্জাদ’ তাকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর কয়েক দফা হামলার শিকার হলেও শেষবার বুধবার (৫ নভেম্বর) তিনি আর রক্ষা পাননি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বাবলার শরীরে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ নয়, টার্গেট ছিলেন সরোয়ার বাবলা। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাইরে থেকে আসা সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাবলার বিরুদ্ধেও বহু অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করছি, গণসংযোগ বা প্রচারণার আগে পুলিশকে জানাতে হবে, যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, সাজ্জাদ হোসেনের হাত ধরে বাবলা ও তার সহযোগী নুরুন্নবী ম্যাক্সন চট্টগ্রামের অপরাধজগতে পরিচিতি পান। ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল থেকে ম্যাক্সন গ্রেপ্তার হলে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে বাবলাকে আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে একে-৪৭ রাইফেল, পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়।

২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে দুজনই কাতারে পাড়ি জমান। তবে ২০২০ সালে কাতারে মারামারির ঘটনায় বাবলাকে এক মাসের সাজা দেওয়া হয় এবং পরে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন তিনি। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একে-২২ রাইফেল, এলজি ও ৩০ রাউন্ড গুলি।

প্রায় চার বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি আবারও আলোচনায় আসেন। গত বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন পান। এর পর থেকেই তিনি বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ হন।

কারাগারে থাকাকালে চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে বাবলার পরিচয় হয়। মুক্তির পর সেই সম্পর্ক আরও গভীর হয়। পরে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে।

মাত্র এক মাস আগে বাবলা বিয়ে করেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির একাধিক স্থানীয় নেতা।

বুধবার বিকেলে বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলিবিদ্ধ হন তিনজন। তাদের মধ্যে বাবলা হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি বিএনপির কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এটি দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের পুরোনো বিরোধের জের। আমাদের প্রার্থীসহ শত শত মানুষ গণসংযোগে ছিলেন; সেখানে সরোয়ার উপস্থিত ছিলেন মাত্র একজন হিসেবে।

২২৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন