গণভোট নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গণ
বিভিন্ন দলের ভিন্ন অবস্থান, ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই নির্বাচন বললেন প্রেস সচিব

শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গণভোট আগে হবে, না সংসদ নির্বাচনের দিন একসঙ্গে- এই প্রশ্নে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম। ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী জোটগুলোর অবস্থান স্পষ্টভাবে ভিন্ন। প্রতিদিনই এই বিষয়ে নতুন নতুন মন্তব্যে বাড়ছে রাজনৈতিক তাপমাত্রা।
সরকারের প্রেস সচিব বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে বলেন, গণভোটের সময় এখনো চূড়ান্ত নয়। আলোচনা চলছে। তবে সংসদ নির্বাচন ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই অনুষ্ঠিত হবে, এটি সরকারের নির্ধারিত সময়সীমা। তিনি আরও জানান, গণভোট একসঙ্গে করার বিষয়ে সরকার সব দিক বিবেচনা করছে। যখনই হোক, গণভোট হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক, বলেন তিনি।
এদিকে বিএনপি জোট বলছে, নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হলে গণভোটের ফলাফলের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার ভোটের নামে নাটক সাজাতে চায়। গণভোট আগে না হলে এটি নিছক একটা প্রদর্শনী হবে।
জামায়াতে ইসলামীও একই সুরে বলেছে, জনগণের মতামত যাচাইয়ের নামে কোনো ‘প্রশাসনিক ভোট’ মেনে নেওয়া হবে না। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, গণভোট আগে হলে তবেই জনগণের সত্যিকারের মতামত জানা সম্ভব।
নতুন গঠিত মধ্যমপন্থী জোট জাতীয় নাগরিক ঐক্য প্রস্তাব দিয়েছে। গণভোট ও সংসদ নির্বাচন দুই ধাপে আয়োজন করা যেতে পারে, তবে সময়ের ব্যবধান এক মাসের বেশি না রাখার পরামর্শ দিয়েছে তারা। জোটের মুখপাত্র ড. সাবিহা রহমান বলেন, একসঙ্গে করলে প্রশাসনিক চাপ বাড়বে, আলাদা করলে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে। তাই সংক্ষিপ্ত ব্যবধানেই দুই ভোট করাই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, এই বিতর্ক মূলত রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। গণভোটের দিন নির্ধারণ এখন ক্ষমতা ও বিরোধী উভয়ের জন্যই কৌশলগত প্রশ্ন। কে কখন ভোট চায়, তা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান প্রকাশ করে। তিনি বলেন, সরকারের সামনে এখন দুই চাপ- আন্তর্জাতিকভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং অভ্যন্তরীণভাবে গণভোটের প্রশ্নে সমর্থন ধরে রাখা।
গণভোটের সময় নির্ধারণ নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না হলেও, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। প্রেস সচিবের বক্তব্যে সরকারের সময়সূচি পরিষ্কার হলেও গণভোট আগে হবে, না নির্বাচনের দিনই, সেটাই এখন রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে