সর্বশেষ

ফেবু লিখন

বিচারের নামে জাতির সাথে আর কোন প্রহসন নয়!

রেজাউল করিম
রেজাউল করিম

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:৪৬ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
আমি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই— গু/ম ও খু/নের সাথে সরাসরি জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে, অনেক সাধারণ মানের অপরাধীদেরকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

প্রকৃত অপরাধীদের দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ দিয়ে যাদেরকে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজন আছেন সরাসরি জড়িত নয়, অথচ যারা সরাসরি জড়িত তাদের কোন খবর নেই— কেন এমন প্রহসন? এর স্পষ্ট প্রমাণ হলো ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশিদুল আলম। তিনিই সেই ব্যক্তি, যার হাত ধরেই বাংলাদেশে গু/ম-খু/নের সূচনা হয়। এই রাশিদুল অনেক অফিসারকে RAB থেকে মিথ‍্যা রিপোর্ট বানিয়ে premature posting করে RAB থেতে আর্মিতে revert করেছিলেন, অথচ আজকে কেউ তার নাম নেয় না। এই রাশিদুল এতোটাই ভয়ংকর ছিলেন যিনি ভিকটিম (তার ভাষায়— Subject to finish) হলে X-Fire এ নিতে রাজি হতেন না, তার ডিমান্ড ছিল — এক সাথে ৩/৪ জন লাগবে (ভাবুন সে কতটা অমানুষ ও নরপিশাচ ছিল। সে তৎকালীন Director Intelligence, Lt Col Zia কে বলতেন— ‘জিয়া একটা নয় বরং একসাথে ৩/৪ টা দিও, ১/২টা মারার সময় আমার নেই’!

আমার কথা যদি কেউ বিশ্বাস না করেন, তাহলে একটু খোঁজ নিন:

· তিনি কবে থেকে কবে পর্যন্ত RAB-এ দায়িত্ব পালন করেছেন?
· ইলিয়াস আলীকে কে তুলে নিয়েছিল?
· চৌধুরী আলমকে কে তুলে নিয়েছিল?
· বাড্ডার কাইয়ুম কমিশনারকে তুলে নেওয়ার জন্য কে লোক পাঠিয়েছিল?
. বেগম খালেদা জিয়াকে যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে চলে যেতে বাধ্য করা হয়, তখন বিএনপি নেতা কর্মীরা বনানী এলাকায় জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে এবং এই পরিস্থিতি বুঝে, আগের দিন রাত থেকে রাশেদুল আলম বিভিন্ন নেতকর্মীকে ধরপাকরাও ও নির্যাতন করা শুরু করে যাতে সেখানে কেউ আসতে না পারে এবং উচ্ছেদ অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে তা নিশ্চিত করেন।
. লেঃ কর্নেল রাশিদ দুই টার্ম RAB এ পোস্টেড ছিলেন এবং এক কথায় RAB তার পরিকল্পনাতেই চলতো, রাশিদ জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া ব‍্যতীত আর কোন জেনারেলকে তোয়াক্কা করতেন না কারন সবাই জানতো— রাশিদ তারেক সিদ্দিকীর খাস লোক।
. রাশিদ যখন দেখতে পেলো কর্নেল জিয়া সরাসরি জেনারেল তারেকের সাখে যোগাযোগ করে এবং দিন দিন তার আস্হাভাজন হয়ে উঠছেন তখনই রাশিদের সাথে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে জিয়ার বিবাদ তৈরি হয়। এরপরে তারা উভয়ে গুম খুন ও Political crime এর মতো হাই প্রোফাইল অপরাধের কর্মকাণ্ডের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। (একটু কল্পনা করুন তখন কি হয়েছিল)।
. রাশিদ ও জিয়ার গু/মের ধরন ছিল দুই রকমের—- জিয়া চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে গু/লিকরে পেট কে/টে পানিতে ডুবিয়ে দিতেন আর রাশিদ পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেন্জে মাথায় 🧠 গু/লি করার পরেও যদি না মরতো তাহলে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস দিয়ে দুইজন জুনিয়র অফিসার কে বলতেন —‘তারাতারি মৃত‍্যু নিশ্চিত করো অন্যথায় I will ensure your death here’ (Just imagine)—— এটা ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন‍্য অফিসারদের ভাষ‍্য যারা ফায়ার করতে রাজি না হওয়াতে মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়েছে (আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী)।

এই রাশিদুল আলমই কারাবন্দী খুনি ও বরখাস্ত জিয়াউল আহসানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ ও সম্ভাব্য হ/ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

একাধিকবার তখনকার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশিদুল আলম আমাকে হত্যারও চেষ্টা চালিয়েছেন। সৌভাগ্যবশত, জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া এবং তখনকার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ (বর্তমানে মেজর জেনারেল) এবং লেঃ কর্নেল শেখ সারওয়ার এর হস্তক্ষেপে রেজা রক্ষা পেয়েছে । আলহামদুলিল্লাহ। অথচ সেখানে রাশিদুল আলমের নাম নেই বরং মেজর জেনারেল শেখ সারওয়ারের নাম আছে যিনি কখনই কোন গু/ম খু/নে জড়িত ছিলেন না এবং রাশিদুলের মতো পালিয়েও যান নাই। শেখ সারওয়ার যখন ডিজিএফআই তে ছিলেন তারও দুই বছর আগে ব্রিগেডিয়ার আজমীকে গু/ম করা হয়। শেখ সারওয়ার জাস্ট তার রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন। যে ১৫ জন অফিসার কে গ্রেফতার ও মামলার আসামি করা হয়েছে—-এদের তুলনায় বহু গুণ বেশি অপরাধীদের নামও কোথাও উল্লেখ নেই, প্রকৃত ও বড় অপরাধীদের যদি সিরিয়াল করা হয় সে তুলনায় এদের অনেকের নামই ১/২ শত অফিসারের নামের পরে সিরিয়াল পাবে— তাই তাদের না ধরে কম অপরাধীদের ধরার কারনে সেনাবাহিনী ও জনমনে আতঙ্ক ও অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এভাবে প্রকৃত অপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে নিরাপরাধীদের ধরলে জনমনে এই বিচারের প্রতি অনাস্থা ও আতঙ্ক তৈরি হবে ।

যতজন অফিসার গু/ম খু/নের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে কর্নেল রাশিদ (বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার) সবচেয়ে বেশি ধুর্ত ও চালাক। তিনি ২০১৪ সালের পরে ভেবেছিলেন বিএনপি শীঘ্রই ক্ষমতায় আসবে আর তাই তিনি দ্রুত তারেক সিদ্দিকীর মাধ্যমে কুয়েতের STMK mission এ নিজের নামে পোস্টিং অর্ডার করান যাতে তিন বছর পরে মানুষ সব ভুলে যায় কিন্তু যখন দেখতে পেলেন যে ২০১৮ তে ও বিএনপি ক্ষমতায় এলো না, তিনি তৎক্ষনাৎ আবার তারেক সিদ্দিকী কে ধরে কর্নেল পদে পদোন্নতি নিয়ে বিজিবি তে গেলেন এবং সেখানে থেকেই আবার RAB এর ADG হওয়ার জন‍্য অনেক চাপ প্রয়োগ করলেন কিন্তু কর্নেল জিয়ার কারনে তা হতে পারেন নাই। তবে তিনি ব্রিগেডিয়ার হিসেবে আবার পদোন্নতি পেলেন। আর মানুষও তাকে ভুলে গেল যে তিনিই প্রকৃত গু/মের রাজা ও সৃষ্টিকারী।

শুধু তাই নয়, মেজর জিয়াউল হক কেও জিনি গু/ম করতো চেয়েছিলেন শুধু পারেন নাই আমি মেজর রেজার কারনে।

অবশ‍্যই অপরাধীদের বিচার হতে হবে তবে প্রকৃত অপরাধীরা যেন বাদ না যায় এবং নিরাপরাধীদের জন্য কোন সাজা না হয়। আমার মনে ICT’র দায়িত্বে যারা আছেন তাদের আরো গভীরভাবে তদন্ত করা উচিৎ ছিল ।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছেঃ (সূরা মা’য়িদাহ্ : ৩২)

’’উক্ত কারণেই আমি বণী ইস্রাঈলকে এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যার বিনিময় অথবা ভূপৃষ্ঠে ফাসাদ সৃষ্টির হেতু ছাড়া অন্যায়ভাবে হ/ত্যা করলো সে যেন সকল মানুষকেই হ/ত্যা করলো। আর যে ব্যক্তি কাউকে অবৈধ হ/ত্যাকান্ড থেকে রক্ষা করলো সে যেন সকল মানুষকেই রক্ষা করলো’’।

লেখক: লেখক : গবেষক ও বিশ্লেষক। 

(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে)

১২০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
ফেবু লিখন নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন