সর্বশেষ

জাতীয়

ডেসকোতে মিথ্যা কেবল চুরির নাটক, দুই কর্মচারীর নেপথ্য ষড়যন্ত্র ফাঁস!

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ৬:২৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)-এর অভ্যন্তরে সম্প্রতি এমন এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।

যা যেন 'কেঁচো খুঁড়তে সাপ' প্রবাদটিকেই বাস্তব রূপ দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে কয়েকজন কর্মচারী মিথ্যা ও সাজানো অপতথ্য ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে- এমন অভিযোগ উঠেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ডেসকোর দুই কর্মচারী-উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন (আইডি নং ১২৪৭) এবং ডেইলি বেসিস ড্রাইভার রাজু শেখ (টেম্পোরারি আইডি নং ৫৬)-সংস্থার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর মূল নেপথ্য নায়ক।

রুহুল আমিন আগে কর্মরত ছিলেন মিরপুরে অবস্থিত ডেসকোর সেন্ট্রাল স্টোর বিভাগে। দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের কারণে গত জুনে তাকে টঙ্গি ডিভিশনে বদলি করা হয়। কিন্তু বদলির সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ‘দেখে নেবেন’ বলে প্রকাশ্য হুমকি দেন।

সূত্র বলছে, ব্যক্তিস্বার্থে ব্যর্থ হয়ে রুহুল আমিন এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ডেসকোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কল্পিত চুরি ও দুর্নীতির গল্প ছড়ানোর পরিকল্পনা করেন।

অভিযোগ তোলা হয় যে, মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার সাব-স্টোর থেকে বিপুল পরিমাণ কেবল ‘চুরি’ হয়েছে। অভিযোগের তীর নির্দেশ করা হয় নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুল হাসান চৌধুরী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম ও জুনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক শামস-উদ-দোহা মুন-এর দিকে।

তবে বাস্তবে এসব কেবল টেন্ডারের আওতায় বিক্রির জন্য এবং নিরাপত্তার কারণে গত মে মাসেই সেন্ট্রাল স্টোরে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং রুহুল আমিন।

সেই সময় স্থানান্তরিত কেবলগুলোর কিছু ছবি তুলে রেখে পরবর্তীতে এগুলো সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিয়ার কাছে সরবরাহ করেন রুহুল ও তার সহযোগী রাজু শেখ। এরপর সেই ছবিগুলোর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় চুরি অপবাদের সাজানো গল্প।

এই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও ভয়াবহ অভিযোগ। ২০২৪ সালের মে মাসে তিনি ডেসকোর অফিসিয়াল প্যাড ও অর্থ বিভাগের ম্যানেজারের স্বাক্ষর জাল করে ১০ লাখ টাকার ব্যাংক লোন নিয়েছিলেন বলে প্রমাণ মেলে।

এ ঘটনায় ডেসকোর মানবসম্পদ বিভাগ থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হলেও, অজ্ঞাত কারণে তদন্তের ফল এখনও প্রকাশিত হয়নি।

ডেইলি বেসিস ড্রাইভার রাজু শেখও অপপ্রচারের অন্যতম অংশীদার। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে কর্তৃপক্ষ তার দুই দিনের বেতন কেটে রাখে এবং পরে তাকে ফর্কলিফট ড্রাইভার পদে বদলি করে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রাজু। জানা যায়, ডেসকোর সাবেক এমডির বাসায় থাকার সুবাদে তিনি প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কর্তৃপক্ষ ও সহকর্মীদের ভয় দেখাতেন।

ডেসকোর অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে রুহুল আমিন ও রাজু শেখ— এই দুই কর্মচারীকে অপপ্রচারের মূল নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শামীম আহমেদ বলেন, ডেসকোতে কোনো ধরনের অপপ্রচার বা দুর্নীতির জায়গা নেই। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় অটল। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৪২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন