রুশ রাসায়নিক কারখানায় ইউক্রেনের হামলা, স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার

বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫ ২:৫৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ব্রিটেন নির্মিত দূরপাল্লার স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক কারখানায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন।
মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এ হামলাকে “সফল ও পরিকল্পিত” বলে উল্লেখ করেছে। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনের সেনা সদর দপ্তর জানায়, এই হামলা একটি সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান অভিযানের অংশ, যেখানে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ব্রায়ানস্ক কেমিক্যাল প্লান্টকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। ইউক্রেন দাবি করেছে, এ কারখানায় বিস্ফোরক, গানপাউডার ও রকেট জ্বালানির উপাদান তৈরি হয়—যা রুশ সেনারা ইউক্রেন আক্রমণে ব্যবহার করে আসছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে আসছে, যেন ইউক্রেনকে এমন অস্ত্র সরবরাহ না করা হয়, যা দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানো সম্ভব। তবে কিয়েভ বলছে, রাশিয়ার যুদ্ধ সক্ষমতাকে দুর্বল করতে এ ধরনের স্থাপনায় আঘাত হানা অপরিহার্য।
এদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ইউরোপের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঘোষণা দেন, যতক্ষণ না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হচ্ছেন, ততদিন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক খাতে চাপ বাড়ানো হবে।
এক যৌথ বিবৃতিতে ইউক্রেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নরওয়ের নেতারা বলেন, যুদ্ধবিরতির আগে, চলাকালীন এবং পরবর্তীতে ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।
এদিকে, একই দিনে রাশিয়াও পাল্টা হামলা চালায় কিয়েভে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হলেও ট্রাম্প এতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পরিকল্পনাও আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার হামলা শুরু করে, যা এখনও চলমান। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও।
সাম্প্রতিক স্টর্ম শ্যাডো হামলাকে ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধের একটি নতুন ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা রুশ সামরিক অবকাঠামোর ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে