সুবিধাবাদীদের মনোনয়ন দিলে প্রতিবাদ করুন

সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সবার সমান অধিকারের গণতন্ত্রে একমাত্র নিজের ভোটটি জনগণের সম্বল। বৈষম্য ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে দ্রোহের আগুন ঝরায়, বুকের মধ্যে জ্বলতে থাকা কষ্টের সিলে প্রতিবাদের কালি লাগিয়ে দুর্বৃত্তকে প্রতিহত করে।
শোষণ ও নিপীড়নের নিরব জবাবের মারণাস্ত্র এই ভোট, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার নৈতিক দায় থেকে তারা মুক্তি পায়, বেঁচে থাকাটা অর্থবহ হয়।
আমাদের সংস্কৃতির সব আয়োজনকে পিছনে ফেলে দেশজুড়ে বিশাল সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয় নির্বাচন। দীর্ঘ ১৬ বছর অবাধ, সুষ্ঠু ভোটাধিকার না থাকায় জনমানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেশ দেখেছে গত বছর ৫ আগস্ট। আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো- এটা আমাদের শ্রেষ্ঠতম অধিকার।
আমাদের আবেগ ও ভালোবাসার রাজনীতিকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে মৌসুমে কাবুলিওয়ালাদের মত কিছু মানুষ ক্ষমতা কিনতে বাণিজ্যে নামে, টাকার জোরে জিততে চায়। আগে কখনো দেখা না গেলেও তার দুই নয়ন এলাকার উন্নয়নের স্লোগান ওঠে, কৃত্রিম ভালো মানুষ, জনদরদী সাজে।
প্রতি রাতে হাত বদল হওয়া রক্ষিতার থেকেও কম টাকায় এখানে প্রশাসন কাপড় খোলে, অন্তহীন চাহিদার রাষ্ট্রীয় কর্মচারী শপথ ভঙ্গ করে গুনে গুনে ঘুষ নেয়, অকল্যাণ রাষ্ট্রে অভাবের তাড়নায় নষ্ট স্বভাবের মানুষেরাও বিক্রি হয়ে যায়। চড়া দামে ভোট কেনা মহাজন বিজয়ী হয়ে এলাকার ইজারা পায়, জমিদারিত্ব করে। সকল অনর্থের মূল এখানেই,রাজনীতির চিরন্তন সৌন্দর্যের সঙ্গে আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধ বেহাত হয়ে গেছে, নষ্টদের দখলে গেছি সব কিছু।
রাজধানী থেকে প্রান্তিক মেঠো পথ, মসজিদের ইমাম নিয়োগ থেকে শুরু করে যাত্রাপালার বাইজি পর্যন্ত রাজনীতিবিদদের হুকুমে নির্ধারিত হয়। অধিকার ও ভালোবাসার এই 'রাজনীতি' এখন অশ্লীল গালি, সুস্থ ও সরল চিন্তার শান্তি প্রিয় মানুষ এ থেকে দূরে থাকে, ঘৃণা করে।
মেধাবীরা অদম্য হয়, দারিদ্রতাসহ নানা সংকট মোকাবেলা করে কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে চাকুরী অথবা ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নেয়। বখাটেরা গলির মোড়ে শিস বাজিয়ে, ছাত্রীদের উত্যক্ত করতে নেতার কাছাকাছি থাকে, মিছিল-মিটিং এ সামনে থাকায় তাদের লেখাপড়ায় ধুলো জমে, পেছনে পড়ে যায়। মাদক ও অস্ত্রের সঙ্গে সখ্য গড়ে তারাই এক সময় নেতা হয়, রাজনীতি করে। দেশের অধিকাংশ জায়গাতেই এ চিত্র, পুরো সমাজ ব্যবস্থা তাদের জিম্মায়, কারও টু শব্দ করার সাহস নেই।
কেউ কেউ মানে না, ঝুঁকি নিশ্চিত জেনেও শুদ্ধচর্চার দুএকজন রুখে দাঁড়ান, সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখান। প্রতিবাদ-প্রতিরোধে সহজে কাউকে সঙ্গে পান না, হাল না ছাড়লে নিপীড়িত হয়েও পরিবর্তন প্রত্যাশীরা সফল হন, মানুষকে জাগিয়ে তোলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান লোক দেখানো নয়, সত্যিকারের ভালো মানুষ ছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি করেননি। বিদ্রোহ করার সর্বনিম্ন শাস্তি মৃত্যুদণ্ড জেনেও তিনি দিশেহারা জাতির সামনে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি এই দলের ত্যাগি নেতাকর্মি সমর্থকদের সাহসের বাতিঘর। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা নৈতিক দায়িত্ব, শাস্তির ভয়ে চুপ থাকলে আপনিও দুর্বৃত্তায়নের শিকার হবেন। আপনার এলাকায় বিএনপির যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে সুবিধাবাদীদের মনোনয়ন দিলে প্রতিবাদ করুন, দলের কর্মী সমর্থক হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
দেশ প্রেমিক শহীদ জিয়ার আদর্শকে আমরা বেহাত হতে দেব না ইনশাল্লাহ।
লেখক: রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক।
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে)
১২৫ বার পড়া হয়েছে