সর্বশেষ

জাতীয়

দেশবরেণ্য শিল্পপতি জহুরুল ইসলামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ৮:০২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানীতে ইষ্টার্ণ হাউজিং লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা, দেশবরেণ্য শিল্পপতি মরহুম জহুরুল ইসলামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় আফতাব নগর সাইট অফিসে এই দোয়া ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইস্টার্ন হাউজিং এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ধীরাজ মালাকার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো: আমিনুল করিম সিদ্দিক, ইস্টার্ন হাউজিং এর ডাইরেক্টর ও আফতাবনগর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ মেজর (অব:) মোঃ আলতামাস করিম এবং এম সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর। কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার ভাগলপুরের ঐতিহ্যবাহী বর্ধিষ্ণু গ্রামে ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট জহুরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। দেশের সফল উদ্যোক্তা ও শিল্পপতি জহুরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে সিংগাপুর যান। এরপর সেখানেই ১৯ অক্টোবর রাতে ৬৭ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। 

জহুরুল ইসলাম এর সংক্ষিপ্ত জীবনী:
ইষ্টার্ণ হাউজিং লিমিটেড তথা ইসলাম গ্রুপের প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম ১৯২৮ সালের ১লা আগস্ট কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার অন্তর্গত ভাগল্পুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালের ১৯ শে অক্টোবর ৬৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি সরারচর উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাজিতপুর উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। পরবর্তীতে তিনি কোলকাতা রিপন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন। জনাব জহুরুল ইসলাম ঠিকাদারী ব্যবসার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বিডিসি নামক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরী করেন। জহুরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে বলা হয় 'ফাদার অব বাংলাদেশী বিজনেস'। খুব ছোট থেকে কিভাবে বড় হতে হয় তা তিনি আমাদের দেখিয়েছেন। খুব ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করে হয়েছিলেন বড় শিল্পপতি, বাংলাদেশী ব্যবসায়িক জগতের মহীরুহ। তিনি তার ব্যবসায়িক বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, কঠোর পরিশ্রম আর ভালবাসা দিয়ে 'ইসলাম গ্রুপ' এর মত একটা অনন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। সরল মনের উদার প্রকৃতির এই মানুষটি ইসলাম গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন হিসাবে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আজও তার প্রতিষ্ঠান গুলো স্বনামে খ্যাত। 

খুব অল্প বয়সেই তিনি তাঁর দূরদর্শিতার মাধ্যমে ভবিষ্যত ঢাকা শহরের আবাসন সংকটের কথা চিন্তা করে ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম রিয়েল এস্টেট কোম্পানী হিসেবে ইষ্টার্ণ হাউজিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন যার অধীনে বহুসংখ্যক বহুমাত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ফ্ল্যাট তৈরি করে বসবাসের আইডিয়া প্রদান এবং বাস্তবায়ন করেন। ⁠জহুরুল ইসলাম সিটি (আফতাবনগর) সহ সর্বমোট ২৯ টি আবাসিক প্রকল্প নির্মাণ করেন। মূল লক্ষ্য ছিল ঢাকার শহুরে এলাকায় আধুনিক ও পরিকল্পিত আবাসন সুবিধা প্রদান। এ উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ। নির্মাণ, প্রকৌশল, উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি রাজধানী ঢাকাকে নতুন রূপ দিতে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশে তার নির্মানকৃত কাজের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কাজগুলো হলো বাংলাদেশ সংসদ ভবনের আঙিনা,বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন, হাইকোর্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ভবন, এমপি হোস্টেল, নগর ভবন ও বিভিন্ন মহাসড়ক। তার নির্মান কাজ সমূহ শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, দেশের বাহিরে্র উল্লখযোগ্য কাজসমূহের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ৫০০০ আবাসস্থল নির্মাণ, রাজধানীর আসেপাশে সুয়েরাজ লাইন এবং রাস্তার উন্নয়ানের কাজ। ইরাকে রাস্তাঘাট এবং আবাসন নির্মাণের কাজ ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু হয় যা ১৯৯০ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ শুরুর পূর্ব পর্যন্ত চলমান ছিল। এছাড়া ইয়েমেনে পাহাড়ের উপরে ১৪০০ বাড়ি নির্মাণ, পোর্ট সিটিতে প্রায় তিন হাজার প্লট এর উন্নয়ন, রাস্তাঘাট এবং ড্রেনেজ লাইনের কাজ তার প্রতিষ্ঠান গুলো সম্পূর্ণ করে। 

একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত উদার এবং উন্নত মনের অধিকারী মানুষ ছিলেন, যার প্রতিফলন ঘটেছে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল এর মত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান নির্মানের মাধ্যমে। ১৯৭৪ সালের খাদ্যাভাবের সময় নিজস্ব অর্থায়নে কিশোরগঞ্জে দুইশত লঙ্ঘরখানা খুলে ছিলেন যা ৬ মাসব্যপী অভুক্ত মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করেছিল । বাংলাদেশর স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, খাদ্য, শিল্প, ব্যবসা, কর্মসংস্থান ও সমাজ সেবায় তাঁর অবদান অতুলনীয়, অনস্বীকার্য। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, দাতা ও ফান্ড রেইজার। 

১৯ শে অক্টোবর ১৯৯৫ সালে তার মৃত্যুর পরে তাকে দাফন করা হয় তার নিজ গ্রাম ভাগলপুরে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১পুত্র ও ৪ কন্যা রেখে গেছেন। বর্তমানে তারই সুযোগ্য পুত্র জনাব মঞ্জুরুল ইসলাম অত্র প্রতিষ্ঠানের কর্নধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর উদ্যোগ, উদ্যম ও কর্মপ্রেরনা যুগ যুগ ধরে ইসলাম গ্রুপের প্রত্যেক যোদ্ধাকে করেছে আপন শক্তিতে বলীয়ান। 

১৩২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন