সর্বশেষ

জাতীয়

মিরপুরে গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ১৬, আরও হতাহতের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:০৯ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি কেমিক্যাল গুদাম ও গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

সাড়ে সাত ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি রাসায়নিক গুদামের আগুন। বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার কারণে পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে যে, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সরাসরি প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি।

ঘটনায় দগ্ধ হয়ে অন্তত তিনজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।

মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদাম ও এর পাশের একটি গার্মেন্টসে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

পোশাক কারখানার আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনলেও রাসায়নিক গুদামের আগুন এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের অভিযান শেষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬টি পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলো এমনভাবে পুড়েছে যে, তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাজুল ইসলাম জানান, “আমার মনে হয় ডিএনএ টেস্ট ছাড়া কোনোভাবেই শনাক্ত সম্ভব না।”

তিনি আরও বলেন, “চারতলা ভবনের ছাদে ওঠার একটি মাত্র গ্রিল গেট ছিল, যা তালাবদ্ধ ছিল। আগুন লাগার পর শ্রমিকরা ওপরে বা নিচে যেতে না পেরে ভেতরেই আটকে পড়েন। কেমিক্যাল বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট টক্সিক গ্যাসে অনেকে সঙ্গে সঙ্গে সেন্সলেস হয়ে যান।”

প্রথমে ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লেগেছে ‘কসমিক ফার্মা’ নামে এক কেমিক্যাল গুদামে। পরে তাদের বোর্ডে লেখা হয় ‘শাহ আলম কেমিকেলস’। আবার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানের নাম ‘আলম ট্রেডার্স’। গার্মেন্টস কারখানার নাম নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি— কেউ বলছেন ‘আরমান গার্মেন্টস’, আবার কেউ ‘জি এম ফ্যাশনস’।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস বলেছে, সেখানে একাধিক পোশাক কারখানা থাকতে পারে, তবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আগুন লাগা গার্মেন্টস এবং কেমিক্যাল গুদাম— কোনো প্রতিষ্ঠানই সরকারিভাবে অনুমোদিত ছিল না, এবং কোনোরকম ফায়ার সেফটি প্ল্যানও ছিল না।

তিনি বলেন, “এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল গুদাম আবাসিক এলাকায় থাকা উচিত না। আমরা এর আগেও বলেছি, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

ঘটনার পর থেকে সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিক, ম্যানেজার বা কোনো কর্মচারীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস পরিচালক বলেন, “পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করছে, কিন্তু মালিকপক্ষের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পর্যন্ত ৩০০ গজ দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।”

গার্মেন্টস নাকি কেমিক্যাল গুদাম কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অপারেশন শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

১০৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন