লোকজ কৃষিজ্ঞানঃ প্রাচীন বীজ থেকে টেকসই ভবিষ্যৎ

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ২:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ, কৃষিপ্রধান দেশ। জনসংখ্যার শতকরা একটি বড় অংশ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভর করে।
মাত্রাতিরিক্ত রসায়ন, হাইব্রিড ও জিন-পরিবর্তিত (GM) বীজের ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাটির অবনতিসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উপাদেয় কৃষিধারা আজ বিপন্ন। এর মাঝেই লোকজ বীজ বা স্বদেশী বীজ-পরিচর্যা (indigenous / landrace / heritage seeds) কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার অজেয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। 'লোকজ কৃষিজ্ঞান' বলতে বোঝায়- প্রচলিত কৃষি-জ্ঞান, প্রাচীন ও দেশীয় বীজ, স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী চাষ-পদ্ধতি, পারিপার্শ্বিক ও পরিবেশ-সম্মত প্রক্রিয়া, পরিবেশ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ- সব মিলিয়ে একটি সর্বাঙ্গীন দৃষ্টিভঙ্গি, যা টেকসই কৃষির উন্নয়ন পরিক্রমা নির্ধারণ করে।
এই প্রবন্ধে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরে আলোচনা করা হলো-
১. লোকজ বীজের ইতিহাস ও গুরুত্ব,
২. বৈচিত্র্য ও জিনগত ধরণ: প্রমাণ ও গবেষণার ফলাফল,
৩. পরিবেশ ও আধুনিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো,
৪. খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভূমিকা,
৫. নীতি, চাহিদা ও কৃষকের ভূমিকা,
৬. সুপারিশ ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা।
১. ইতিহাস ও গুরুত্বঃ
বাংলাদেশের কৃষি প্রথা হাজার বছরের পুরনো। আমন, আউশ, আমন, বোরো ধান, স্থানীয় ধান-খনিজ, লাল চাল, মৌসুমী বীজ, ফুল ও মসলাসহ বহু দেশি জাত এবং প্রজাতি চর্চিত হয়েছে। প্রত্যেক অঞ্চলের জলবায়ু, মাটির ধরণ, জলাবদ্ধতা, বন্যা ও খরার প্রবণতা অনুযায়ী ধান বা অন্যান্য ফসলের জাত বেছে নেওয়া হতো। এই ধানের ধরণগুলো আস্তে আস্তে পরিবর্তন হয়, স্থানীয় কৃষকরা নির্বাচিত বীজ সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবন করতেন (বীজ বাঁচানো, বীজ বিনিময় ইত্যাদি)।
লোকজ বীজের গুরুত্ব মুলত এর স্থায়িত্ব ও বৈচিত্র্যে- যেখানে 'এক জাত, এক ধরণ, এক পন্থা' বিকল্প নয় বরং বহু প্রজাতি ও বৈচিত্র্য মাঠে থাকায় রোগ, পোকার আক্রমণ, খরা, বন্যা ইত্যাদির ঝুঁকি কম থাকে।
২. বৈচিত্র্য ও জিনগত ধরণ ও গবেষণা ফলাফলঃ
বাংলাদেশে বহু গবেষণা প্রমাণ করেছে লোকজ বীজে আছে উল্লেখযোগ্য জেনেটিক বৈচিত্র্য যা উন্নত জাতগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম, বিশেষ করে খরা, বন্যার সময় বা উদ্ভূত নতুন রোগ প্রতিরোধে।
(ক) ধানের দেশি জাত ও বৈচিত্র্য:
T. Aman অঞ্চলের দেশি ধান-প্রজাতির ক্ষেত্রে অতীত গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, কোভিড-কালিন পরিবেশেও (সংকটালে- পরিচর্যাহীন অবস্থায়) ওই ধানগুলোর কৃষি চরিত্র যেমন উঁচু-নিম্ন পানি সহনশীলতা, রোগ-পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি উন্নত জাতগুলোর সমমন্বয়ে কিছু ক্ষেত্রে ভালো পারফরমেন্স দেখিয়েছে।
Rice landraces-এর মধ্যে 'seed dormancy' বা বীজের 'ঘুমানুষ্ঠান' বৈশিষ্ট্যের প্রভেদ পাওয়া গেছে, যা খরা বা বন্যার মতো চ্যালেঞ্জে ব্যবহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ 'Bari Mota,' 'Tulsimala,' 'Chinigura,' 'Dishari,' 'Birindi' ইত্যাদির মধ্যে dormancy-র হাই মান পাওয়া গেছে।
'Aromatic rice landraces'-এর agro-morphological বৈচিত্র্য এবং জিনগত পার্থক্য দেখা গেছে একই নামে থাকা জাতগুলোর মধ্যে, যা বীজ সনাক্তকরণ, সংরক্ষণ ও ভবিষ্যতের বংশবিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ হবে।
(খ) অন্যান্য ফসল ও বীজের উদাহরণ:
সরিষা (rapeseed / Brassica napus) এর ৩৮টি দেশি genotype-এর Genetic diversity বিশ্লেষণে ক্লাস্টার বিশ্লেষণ দেখায় যে, আন্তঃ-ক্লাস্টার দূরত্ব বেশি, যা নির্দেশ করে ভালো সীমার বাইরে বেঁচে থাকে জাত-ভিন্নতা; মানে রোগ, পরিবেশের চাপ ইত্যাদিতে প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকতে পারে।
বোরো ধান (Boro rice) এর দেশি landrace-এর SSR মার্কার ব্যবহার করে বৈচিত্র্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে; প্রমাণ পাওয়া গেছে এই দেশে irrigated ধানগুলোর মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য আছে, যা গুণগত বৈশিষ্ট্য ও জন্ম-পরিচর্যায় উপযোগী হতে পারে।
৩. পরিবেশ ও আধুনিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোঃ
আজকের দিনে শুধু উচ্চ ফসল ফলনই যথেষ্ট নয়, কৃষি পদ্ধতি হতে হবে পরিবর্তনশীল পরিবেশ ও জলবায়ু চাপে সহনশীল (climate resilient), মাটির পুষ্টি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।
খরা, বন্যা ও জলবায়ুর পরিবর্তন,
বন্যা ও খরার সময় উচ্চতর ঘুমানুষ্ঠান বা seed dormancy-র Landrace-জাত সেই সময় উপকারী হয় যখন ধানগাছ গোলাপি হয়ে গিয়ে গরম ও অতিরিক্ত পানির কারণে বিকল হয়ে যেতে পারে; ঘুমানুষ্ঠান বীজগুলোকে সময় দেয় যাতে সূর্য ও তাপ কমে গেলে germinate করতে পারে।
কোস্টাল এলাকায় Aman ধান Landrace-এর seed dormancy বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ দেখায় যে কয়েকটি জাত যেমন Bari Mota, Tulsimala ইত্যাদির dormancy প্রায় শতভাগ, যা ফসলের সময় বন্যা ও বিকিরণশীল অবস্থায় ধান বীজ শস্যে sprout হওয়ার দিকে থেকে রক্ষা করতে পারে।
রোগ-পোকা ও মাটির অবস্থা:
লোকজ জাতগুলো প্রায়ই স্থানীয় রোগ ও পোকা-চক্রের সঙ্গে শতাব্দী ধরেই খাপ খেয়ে এসেছে, তাই এরা কিছুটা স্বল্প রসায়ন ও কম রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যে ব্যবহারযোগ্য।
মাটির উর্বরতা কম হলে, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বাড়ায়, যা মাটির জীবাণু ও মাটির গঠন নষ্ট করে। তবে দেশি জাত ও বৈচিত্র্যময় ফসল ঘিরে প্রচলিত কৃষি পদ্ধতি যেমন, সার্বিক ফসল চক্র, intercropping, mixed cropping ও জৈব সার ব্যবহার মাটির স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটায়। লোকজ বীজ জাতগুলো সেই পথের অংশ।
৪. খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি ও সামাজিক-সংস্কৃতিক ভূমিকাঃ
খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি:
বিভিন্ন ধরণের দেশি ধান, গম, শস্য ও অন্যান্য ফসল যেমন- দেশি ধান, ডাল, ফলা-শাক-মসলা ইত্যাদি প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজে ভরপুর। এসব ফসল নিত্য-প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করে।
খাদ্য বৈচিত্র্য বাড়লে খাদ্যাভ্যাসেও উন্নয়ন হয়; একটি মাত্র ধান-ভিত্তিক খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তে বিভিন্ন ধান, শস্য ও শাকসব্জির সংমিশ্রণে পুষ্টির ঘাটতি কম হয়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান:
দেশি জাতের ধানের নাম, রঙ, স্বাদ, গন্ধ এবং রান্নার স্বাতন্ত্র্য ধরা আছে স্থানীয় সংস্কৃতিতে। উদাহরণ: চিনিগুড়া চাল, কালচিনি ধান, সুগন্ধি ধান ইত্যাদি নিজের স্বাদ ও স্বীকৃতি রাখে।
উৎসব, রীতি-নীতি, লোকধারা ও ইতিহাসে এসব ফসলের অংশ রয়েছে; বীজ সংরক্ষণ ও বিনিময় প্রথা ক্রমে সামাজিক বন্ধন ও ঐতিহ্য রক্ষা করে।
কৃষক সম্প্রদায়ের জ্ঞান: কোন জাত কোথায় ভালো, কখন বোনা, কীভাবে সংরক্ষণ ইত্যাদি বহু-প্রজন্ম ধরে উত্তোলন করা তৎপর জ্ঞান, যা হারিয়ে গেলে এই ধরণের কৃষিজ্ঞান দুর্লভ হবে।
৫. নীতি, চাহিদা ও কৃষকের ভূমিকাঃ
টেকসই কৃষির জন্য শুধু পুরনো-বীজ বা ধারা সংরক্ষণ যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সঠিক নীতি, উন্নয়ন প্রকল্প, জ্ঞানের সম্প্রসারণ ও বাজার সংযোগ।
কৃষকের ভূমিকা:
বীজ সংরক্ষণ ও বিনিময়: পারিবারিক ও সম্প্রদায় জনগোষ্ঠীভিত্তিক বীজ-বিনিময় প্রথা পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন।
প্রচলিত ও দেশি জাতের বেছে-নেওয়া:
নতুন চাহিদা ও বাজারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এমন দেশি জাত নির্বাচন করতে হবে যাদের স্বাদ, গন্ধ ও কৃষি-তথ্য ভালো।
জৈব ও কম-রসায়ন কৃষি: রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে, জৈব সার, সবুজ সার, পোকা নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক ও ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ।
নীতি ও প্রশাসনিক ভূমিকা:
বীজ নীতি ও আইন: সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দেশি জাত ও বীজ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ নীতি প্রণয়ন করতে পারে যা বীজ স্বায়ত্তশাসন ও বীজ শেয়ারে বাধা সৃষ্টি না করে।
গবেষণা ও বীজ ব্যাংক: উন্নত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বীজ ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেশি জাতের সংগ্রহ, বৈচিত্র্য‐বিশ্লেষণ, বংশবিস্তার এবং উন্নয়ন প্রকল্প তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ।
বাজার সংযোগ: দেশি জাতের ফসলের জন্য ভোক্তা চাহিদা বাড়ানো; 'পণ্যের খাসত্ব' ও 'স্বাদ-গন্ধ' সোর্স হিসেবে মার্কেটিং করা। যেমন, দেশি চাল ও সুগন্ধি চালের বাজার বাড়ানো যায় ব্র্যান্ডিং ও গুণমান নিশ্চিত করার মাধ্যমে।
প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা: কৃষকদের তত্ত্বাবধান, সম্প্রদায় সংগঠন, NGO ও Extension Services দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সচেতনতা ও তথ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন।
উদাহরণ ও অভিজ্ঞতা:
দক্ষ কৃষক দল বা NGO যেমন, Green Foundation ভারত এবং প্রতিবেশি দেশে লোকজ বীজ সংরক্ষণ ও অপারগ রিস্ক প্রধান অঞ্চলে কৃষকদের সহায়তা করছে; তারা দেখায় যে, দেশি জাতের ব্যবহার কিভাবে খরচ কমায় ও জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে তোলে।
'Participatory variety selection' (PVS) পদ্ধতি, যেখানে কৃষক সরাসরি জাত নির্বাচন ও পরীক্ষা করে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত জাত ব্যবহার ও যাচাই করে, সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। বাংলাদেশে গম (wheat)-চাষে এমন একটি প্রকল্পে দেখা গেছে, নতুন রোগ-প্রতিরোধী এবং উৎপাদনশীল জাত নির্বাচনে কৃষক রোগ-ঝুঁকি কমাতে সক্ষম হয়েছে।
৬. সুপারিশ ও ভবিষ্যতের দিক-নির্দেশনাঃ
লোকজ কৃষিজ্ঞান নিয়ে টেকসই ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব যদি উল্লেখ্য পন্থাগুলো গ্রহণ করা যায়-
১. দেশি বীজ-ডাটাবেস ও ই-জিনগত মানচিত্র তৈরি:
সমগ্র দেশি জাত, তাদের বৈশিষ্ট্য (উচ্চতা, ছাল, ধানের ধরণ, স্বাদ, চলনক্ষমতা, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, বিকাশকাল, শুকনো ও স্যাঁতস্যাঁতে এলাকায় পারফরমেন্স etc.) তথ্য সংগ্রহ ও ডিজিটাল রেকর্ডের ব্যবস্থা করা।
২. বীজ ব্যাংক এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক সংরক্ষণ কেন্দ্র:
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বীজ ব্যাংক স্থাপন; যেখানে কৃষকরা নিজেরা দেশি বীজ জমিয়ে রাখতে পারবেন, বিনিময় করতে পারবেন।
৩. বিভিন্ন চাষ পদ্ধতির সমন্বয়:
আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও দেশি প্রথার মেলবন্ধন হতে হবে- যেমন, পরিবেশ-বন্ধু পদ্ধতি, অল্প রসায়ন, নতুন সার্বিক ফসল চক্র, mixed cropping, intercropping, agroforestry ইত্যাদি।
৪. গবেষণা ও সম্ভাব্য উন্নয়ন (breeding programmes):
দেশি ধান ও অন্যান্য ফসলগুলোর মধ্যে যেমন উচ্চ dormancy, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, বিকল্প পানি ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা আছে- সেই বৈশিষ্ট্যগুলোর ওপর আরো genetic ব্যাকগ্রাউন্ড বিশ্লেষণ ও উন্নয়ন করা উচিত, যাতে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ইত্যাদিতে সহনশীল জাত তৈরি করা যায়।
৫. নীতি ও আইনগত সহায়ক পরিবেশ গঠন:
বীজ নীতি যেন কৃষকের স্বার্থে- বীজের বৌদ্ধিক স্বত্ব, বীজ শেয়ারিং, বীজ বিক্রয় ও বিনিময় ক্ষেত্রে প্রশাসনিক বাধা কমানো, ঋণ ও প্রণোদনা পাওয়া যায় দেশি বীজ সংরক্ষক ও কৃষকদের জন্য।
৬. বাজার ও ভোক্তা সচেতনতা:
দেশি জাতের ফসলের স্বাদ, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের গুণ গুরুত্ব দিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে; 'লোকজ' বা 'স্বদেশী' বা 'heritage' ব্র্যান্ড তৈরি করা যেতে পারে।
৭. শিক্ষা ও সম্প্রসারণ পরিষেবা (Extension Services):
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, এনজিও, গণ ও কৃষক সংগঠন সব মিলিয়ে জমি-পরীক্ষা, কর্মশালা, প্রদর্শন ক্ষেত্র, ক্ষেত-পরীক্ষাদি মাধ্যমে কৃষকদের লোকজ বীজ ব্যবহারের সুফল দেখাতে হবে।
উপসংহারঃ লোকজ কৃষিজ্ঞান আমাদের অতীতের ঐশ্বর্য, আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে কখনও নীরব, কখনও সরব যোগাযোগ। কিন্তু এটি একথায় থেমে থাকে না অতীতে; এর শক্তি দিনে দিনে বাস্তব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তায়, পরিবেশ রক্ষায়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ধরে রাখতে পারে দৃঢ়ভাবে। প্রাচীন বীজ সংরক্ষণের কাজ শুধু স্মৃতি নয়, এই প্রক্রিয়াকে গতিশীল ও কার্যকর করতে পারলে, যেখানে আমাদের কৃষক, গবেষক ও প্রশাসন সবাই মিলে কাজ করবে- তখনই আমরা একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত দেখতে পারব নিশ্চয়ই।
সূত্রসমূহঃ
১. কোস্টাল রাইস ল্যান্ডরেসেসের বীজের শীতনিদ্রা ও অঙ্কুরোদগম সম্ভাবনা: জলবায়ু-সহনশীল চাষাবাদের জন্য প্রভাবসমূহ। জার্নাল।
২. বরিশাল অঞ্চলের টি-আমন ধানের ল্যান্ডরেসেসে জেনেটিক বৈচিত্র্য এবং উৎপাদন ক্ষমতা। জার্নাল।
৩. ধান (Oryza sativa L.)-এর জেনেটিক বৈচিত্র্য বিশ্লেষণ (মধুপুর অঞ্চল)। জার্নাল।
৪. বাংলাদেশের বরো ধানের ল্যান্ডরেসেসে জেনেটিক বৈচিত্র্য বিশ্লেষণ। জার্নাল।
৫. বাংলাদেশের সরিষা (Brassica napus L.) জেনোটাইপগুলোর জেনেটিক বৈচিত্র্য।জার্নাল।
৬. একই নামে পরিচিত সুগন্ধি ধানের ল্যান্ডরেসেসের কৃষি-রূপগত বৈশিষ্ট্যায়ন ও জেনেটিক বৈচিত্র্য।জার্নাল।
৭. গমের অংশগ্রহণমূলক প্রজাতি নির্বাচন এবং এর প্রজাতিগত বৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব। জার্নাল।
৮. গ্রিন ফাউন্ডেশন: টেকসই পৃথিবীর জন্য বীজ বহুলীকরণে বিনিয়োগ; স্থানীয় বীজ সংরক্ষণ মাধ্যমে গ্রামীণ সহনশীলতা পুনরুজ্জীবন।
লেখকঃ কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক।
১৫৭ বার পড়া হয়েছে