রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে যাচ্ছে জুলাই সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ২:০২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বহু প্রতীক্ষিত জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি আজ (মঙ্গলবার) রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এই অনুলিপিতে সনদের মূল বিষয়বস্তু অপরিবর্তিত থাকলেও কিছু ভাষাগত সংশোধন করা হয়েছে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে—সনদে উল্লেখ থাকা ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কে কোনো সুপারিশ এতে নেই। কমিশন জানিয়েছে, বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলাদা সুপারিশপত্র পরে অন্তর্বর্তী সরকার ও দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হবে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই দফায় ৬৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম ধাপে ৩৩টি ও দ্বিতীয় ধাপে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়। এই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রের ছয়টি খাতে (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ) গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ৮৪টি সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়।
চূড়ান্ত সনদটি তিনটি ভাগে বিভক্ত—প্রথম ভাগে রয়েছে প্রেক্ষাপট, দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব, আর তৃতীয় ভাগে রয়েছে ৭ দফা অঙ্গীকারনামা।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুক্রবার, অনিশ্চয়তায় কিছু দল
আগামী শুক্রবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। তিন হাজার অতিথির উপস্থিতিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোট তাদের পক্ষ থেকে দুজন করে স্বাক্ষরকারীর নাম জমা দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত সব দল সনদে সই করবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
সনদের সঙ্গে সংবিধানের ৪ক অনুচ্ছেদ (বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শন সংক্রান্ত) বিলুপ্তির বিষয়ে অধিকাংশ দলের মত থাকলেও, এটি শেষ পর্যন্ত সনদে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। কমিশন জানিয়েছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সংসদ।
বাস্তবায়নের পথ সুস্পষ্ট নয়, রয়েছে মতপার্থক্য
সনদে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনও মতানৈক্য কাটেনি। যদিও ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে এবং ‘গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন’-এর বিষয়ে একটি প্রাথমিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তবুও বাস্তবায়নের সময়, পদ্ধতি ও গণভোটের প্রশ্ন নির্ধারণে বিভাজন রয়েছে বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)-র মধ্যে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সোমবার জানান, “সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি মঙ্গলবার দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। শুক্রবারের মধ্যেই বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত সুপারিশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করার চেষ্টা চলছে।”
১১২ বার পড়া হয়েছে