'আমার সামনেই পুলিশের গুলিতে দু'জন প্রাণ হারান'

বৃহস্পতিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:২৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ডিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তাসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার সাক্ষ্য দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় আমার চোখের সামনে পুলিশের গুলিতে দুজন প্রাণ হারান। পরে নিশ্চিত হই, সেখানে মোট ছয়জন আন্দোলনকারীকে হত্যা করা হয়।”
তিনি আরও জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত দীর্ঘ ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিনি নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেন। সে সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনকারীদের চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করতে চেয়েছিল।
আসিফ মাহমুদ দাবি করেন, “আমরা যখন ডিবি কার্যালয়ে আটকে ছিলাম, তখন আমাদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আন্দোলন না থামালে আমাদের হত্যা করার অনুমতি দেওয়া আছে।”
ঘটনার দিন অর্থাৎ ৫ আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
এ মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান
সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী
রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম
সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল
সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন
কনস্টেবল সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম
এই আটজনের মধ্যে প্রথম চারজন পলাতক, বাকি চারজন বর্তমানে আটক রয়েছেন।
আজকের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামীমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা। আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ মাহমুদের বাকি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী ১৬ অক্টোবর নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে সংঘটিত সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে সরকারের শীর্ষ মহল, দলীয় ক্যাডার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
১৪৩ বার পড়া হয়েছে