সর্বশেষ

অর্থনীতি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে ধস: ২২ বছরে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৫ ৭:১৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজনৈতিক অস্থিরতা, উচ্চ সুদহার এবং বিনিয়োগে আস্থার ঘাটতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে ব্যাপক মন্দা দেখা দিয়েছে।

গত আগস্ট মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬.৩৫ শতাংশ, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন, জুলাই ও আগস্ট—এই তিন মাসেই ঋণপ্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক পতন ঘটে। জুলাইয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৫২ শতাংশ এবং জুনে ছিল ৬.৪৫ শতাংশ। অথচ গত বছরের জুলাইয়ে এ হার ছিল ১০.১৩ শতাংশ।

বিশ্লেষকদের মতে, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সরকারের পরিবর্তনের পর থেকে বেসরকারি বিনিয়োগে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকিং খাত এবং সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানে।

বর্তমানে ব্যাংকঋণের গড় সুদহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করে নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে ঋণ দিচ্ছে। এতে করে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে অনীহা প্রকাশ করছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান বাধ্য হয়ে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, “বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আস্থা। কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উচ্চ সুদের কারণে এই আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতি কাটবে না বলেই মনে হয়।”

বর্তমানে দেশের এক-চতুর্থাংশ ব্যাংক কার্যত ঋণ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে। আবার অনেক ব্যাংক ঋণের বদলে সরকারি সিকিউরিটিজ, বিল ও বন্ডে বিনিয়োগে মনোযোগী হচ্ছে। অন্যদিকে, গ্রাহকের আমানত ফেরত দিতেও হিমশিম খাচ্ছে অন্তত পাঁচটি ব্যাংক।

সম্প্রতি পর্ষদ পরিবর্তন হওয়া ১৪টি ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটির ঋণ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ, অন্যগুলো সীমিত পরিসরে চালু রেখেছে। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসাও নতুন সরকারের আমলে সীমিত হয়ে পড়েছে বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১,৩০০ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়মিত করার জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীসহ অন্তত ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ‘বিশেষ বিবেচনায়’ পুনঃতালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যদিও এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোরই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

নতুন সরকার সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু সূচকে ইতিবাচক অগ্রগতি আনলেও বেসরকারি খাতের স্থবিরতা কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক নীতিতে স্থিতিশীলতা না এলে এই ধারা চলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

১০৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন