কুষ্টিয়ায় জামায়াত প্রার্থীর ‘নবীজী সাংবাদিক’ মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক

বৃহস্পতিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:২৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও ধর্মীয় বক্তা মুফতি আমীর হামজার ‘নবীজী সাংবাদিক ছিলেন’ মন্তব্যকে ঘিরে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
গতকাল স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, “নবী (সা.) ছিলেন সংবাদবাহক—সেই অর্থে তিনিও সাংবাদিক ছিলেন”।
বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা শহরের নানা মহল ও সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই মনে করেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত দূত (Messenger), যিনি মানবজাতির কাছে আল্লাহর আদেশ, নিষেধ, নীতি ও আদর্শ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন. ইসলামি ধর্মতত্ত্বে তাঁকে ‘রসূল’ বা ‘নবী’ হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে বসানো হয়েছে। আর প্রচলিত অর্থে সাংবাদিক—পার্থিব সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কিত তথ্য/সংবাদ পরিবেশনকারী—যার সঙ্গে নবুওয়তের পবিত্র দায়িত্বের তুলনা করা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানতে পারে বলে মত দেন অনেকে।
উপজেলা জামায়াতের এক সিনিয়র নেতার ভাষ্য, “এই মন্তব্যের কারণে সমাজের একটি বড় ধর্মপ্রাণ অংশ আহত হয়েছে, দলীয় ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”
ধর্মীয় বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামি পরিভাষায় “নবী” ও “রসূল” শব্দের ব্যপ্তি আধ্যাত্মিক ও শাশ্বত, অপার্থিব গৌরবে ঋদ্ধ। সেখানে প্রচলিত পেশাজীবী পরিচয়ে নবীজীকে তুলনা করাকে তাঁরা অপ্রাসঙ্গিক ও অপমানজনক বলছেন। অনেক মুসলিম নাগরিকও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মুফতি আমীর হামজা বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে শুধু সামাজিক মাধ্যমে নয়, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ও স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার একাধিক মন্তব্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে, কারণ সংগঠনের গঠনমূল্য ও নীতিগত শৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে পড়ছে এবং দলটি নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে সতর্ক অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে। এ ধরণের ঘটনা দলীয় ঐক্য, ভাবমূর্তি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হয়ে থাকছে।
১২৫ বার পড়া হয়েছে