সর্বশেষ

সারাদেশ

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সভায় নেতৃবৃন্দ

'সাংবাদিক রফিকুল্লাহর ওপর হামলাকারীদের কোন ছাড় নয়' 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বৃহস্পতিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৫ ২:৩২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
সাংবাদিক রফিকুল্লাহ কালবীর ওপর হামলাকারীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।

হামলার সাথে যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ প্রশাসনকে সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান। গতকাল বুধবার (৮অক্টোবর) রাতে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী পরিষদের এক জরুরী সভায় এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।

 

গত সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর রফিকুল্লাহ কালবীর ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ হামলায় ক্লাবের তিনজন সদস্য জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে। নির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে। পদ স্থগিত হওয়া সদস্যরা হলেন দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুন্সী শাহিন আহমেদ জুয়েল (৪০), দৈনিক ট্রাইব্যুনাল পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আমিন হাসান (৩০), দৈনিক যায়যায় দিন ও গ্লোবাল টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সামিউল আজিম সনি আজিম (৪০)। এছাড়াও নির্বাহী পরিষদের সভায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং অভিযুক্তদের ১০ দিনের শোকজ করা হয়েছে।

 

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-মামুন সাগরের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সাধারন সম্পাদক এ এম জুবায়েদ রিপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান কুমার, সহ সভাপতি নুরুন্নবী বাবু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত, কোষাধ্যক্ষ এম লিটন-উজ-জামান, দপ্তর সম্পাদক মোকাদ্দেস হোসেন সেলিম, প্রচার প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক তৌহিদী হাসান, ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ নিজাম উদ্দিন, সম্পাদক সদস্য আনিসুজ্জামান ডাবলু, এম এ জিহাদ, এ এইচ এম আরিফ, নুরুল কাদের ও এস এম রাশেদ।

 

এসময় বক্তারা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। যাতে দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা যায়। ঘটনাটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের আহবান জানান প্রেসক্লাব নেতারা।

 

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর রফিক উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। আরও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন স্থানীয় দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুন্সী শাহিন আহমেদ জুয়েল (৪০), দৈনিক সত্যখবর পত্রিকার প্রতিবেদক শরিফুল ইসলাম শরীফ (৩৫), দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও জাতীয় দৈনিক ডেইলি ট্রাইব্যুনাল পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আমিন হাসান (৩০), দৈনিক যায়যায় দিন ও গ্লোবাল টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সামিউল আজিম সনি আজিম (৪০)।

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, পাল্টাপাল্টি ফেসবুক পোস্টের জের ধরে হামলার অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

মামলার এজাহারে রফিক উদ্দিনের স্ত্রী সারাবান তহুরা উল্লেখ করেছেন যে, 'ভয়েস অব কুষ্টিয়া নামক ফেসবুক পেইজ হতে আওয়ামীলীগের দোসর আফরোজ আক্তার ডিউকে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা থেকে বহিষ্কার করার বিষয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করে। উক্ত ফেসবুক পোস্টে আমার স্বামী একটি কমেন্টস করে। তারপর হতে উপরোক্ত আসামীরা আমার স্বামীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে এবং তার ক্ষতি করার পাঁয়তারা করতে থাকে। গত ৬ অক্টোবর রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় আমার স্বামী উপরোক্ত আসামীদের সাথে ফেসবুক পোস্ট সংক্রান্তে মিমাংশার জন্য কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়াস্থ সনো-২ টাওয়ার গলির ভিতরে যায়। এক পর্যায়ে আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বেআইনী জনতা দলবদ্ধে আমার স্বামীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ী চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুসি, লাথি মেরে নীলাফোলা, রক্ত জমাট জখম করে।'

 

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, 'আমার স্বামীকে মারপিট করার পর আসামীরা জোরপূর্বক তাকে একটি রিক্সায় তুলে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের ২য় তলায় হল রুমের ভিতরে নিয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে সেখানে আমার স্বামীকে আটক রেখে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামীরা পুনরায় তাকে এলোপাতাড়ী চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুসি, লাথি মারিয়া নীলাফোলা, রক্ত জমাট জখম করে। এমন সময় আমার স্বামী আসামীদের মাইরের আঘাতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে আসামীরাই আমার স্বামীকে উদ্ধার পূর্বক ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার মোবাইলে আমার স্বামীর অসুস্থতার কথা জানালে আমি দ্রুত হাসপাতালে যাই এবং আমার স্বামীকে চিকিৎসাধীন দেখতে পাই। পরবর্তীতে আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে ডাক্তার আমার স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমার স্বামী বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে। মামলার বাদী বলেন- আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে হামলা ও মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অপারেশন করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ। যারা হত্যাচেষ্টা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমরা মামলা করেছি, জড়িতদের শাস্তি চাই।'

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন