সর্বশেষ

সারাদেশ

উজানের ঢলে প্লাবিত তিস্তা পাড়ের জেলা, পানি কমলেও দুর্ভোগ অব্যাহত

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:৩৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
উজান থেকে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের নদনদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

নদীর স্রোতে ভেসে আসছে হাজারো গাছের গুঁড়ি ও উপড়ে পড়া গাছ। নদীপারের বাসিন্দারা এসব গাছ তুলে এনে বিক্রি করছেন।

তবে পানি কিছুটা কমলেও উত্তরাঞ্চলের চার জেলা—কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর ও নীলফামারীতে এখনও বন্যার প্রভাব কাটেনি। অনেক এলাকায় আমন ক্ষেত ডুবে রয়েছে, কোথাও সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বহু পরিবার এখনও বাঁধের ওপর পলিথিন মোড়ানো ঘরে রাত কাটাচ্ছেন।

গত রোববার রাতের ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁয়ে যায়। ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা (৫২.১৫ মিটার) অতিক্রম করে ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের সব ৪৪টি গেট খুলে দেওয়ায় নিচু এলাকার তিনটি জেলা প্লাবিত হয়। এতে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

চাষাবাদ ও অবকাঠামোর ক্ষতি
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের হাজিরপাড়া, নরশিং ও তালপট্টি চরে এখনও জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে। ডুবে আছে প্রায় ১০০ একর জমির আমন ক্ষেত। স্থানীয় কৃষক নয়া মিয়া বলেন, “চারা তলিয়ে গেছে, পানি না নামলে আর চাষ করা যাবে না।” সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম জানান, এক রাতের বন্যায় তিনটি পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। পানি কমলেও সড়ক যোগাযোগ না থাকায় পুরো ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মৃধা বলেন, “মর্ণেয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।” উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, কিছু আমন ক্ষেত ডুবলেও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।

লালমনিরহাটে বাঁধ না থাকায় ক্ষতি বেশি
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় তিস্তা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানি প্রবাহে গ্রামীণ অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুইটি কালভার্ট ও একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ। জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার ও ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে। পাটগ্রামে ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, সিরাজগঞ্জে নতুন উদ্বেগ
কুড়িগ্রামের চর যাত্রাপুর এলাকায় তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ১,৭৮৬ হেক্টর আমনসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “উজানে বৃষ্টি না থাকায় তিস্তার পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই।”

তবে ভাটির দিকে, বিশেষ করে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, কাজীপুর পয়েন্টে প্রতিঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। যদিও এখনও বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন।

আবহাওয়া পরিস্থিতি: মৌসুমি বায়ুর বিদায় ঘণ্টা
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পথে রয়েছে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাত কমবে। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানান, “আগামী সপ্তাহে মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বিদায় নেবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।”

১০৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন