গাজার পথে যাচ্ছে ফ্লোটিলার নতুন ত্রাণবাহী নৌবহর

বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জন্য খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সমুদ্রপথে এগিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর জোট ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ (এফএফসি)-এর নতুন নৌবহর।
বর্তমানে বহরটি ভূমধ্যসাগরের গাজা উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের নৌবহর গাজার উপকূল থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ২৭৭ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছে। এটি সেই এলাকায় রয়েছে, যেখানে কিছুদিন আগেই আমাদের আগের মিশনের নৌযানগুলো ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করেছিল।”
এফএফসি’র অন্যতম সদস্য সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা’ এক্স প্ল্যাটফর্মে (পূর্বে টুইটার) একটি পোস্টে জানায়, “আমরা গাজার পথে অগ্রসর হচ্ছি।”
নতুন এই বহরে রয়েছে ৯টি নৌযান, যেগুলোর প্রতিটিতে খাদ্য, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় পণ্য বহন করা হচ্ছে। বহরের সঙ্গে রয়েছেন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী এবং জাহাজ ক্রু।
এর আগে চলতি বছরের আগস্ট মাসে এফএফসি ঘোষণা দিয়েছিল, তারা গাজার উদ্দেশে ৪৩টি ত্রাণবাহী নৌযান পাঠাবে। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এই মিশনে ছিলেন বিশ্বের ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি, যাঁদের মধ্যে ছিলেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ বহু সংসদ সদস্য, আইনজীবী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী।
৩১ আগস্ট স্পেনের এক বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে ওই ফ্লোটিলা। তবে গাজার জলসীমায় পৌঁছানোর আগেই ইসরায়েলের নৌবাহিনী পুরো বহরটিকে আটক করে এবং যাত্রী ও ক্রুদের জোরপূর্বক ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অভিযাত্রীদের মধ্যে কিছুজনকে আটক রাখা হয় এবং বাকিদের বিভিন্ন দেশে ফেরত পাঠানো হয়। গ্রেটা থুনবার্গসহ অনেককে ইতোমধ্যে গ্রিসে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলের এ ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৮ বছর ধরে গাজার সমুদ্রপথ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গাজায় কোনো কার্যকর সমুদ্রবন্দর না থাকায় আন্তর্জাতিক কোনো নৌযান উপকূলবর্তী এলাকায় পৌঁছাতে পারে না। এ অবস্থায় ফ্রিডম ফ্লোটিলার নতুন বহরটি যদি গাজার উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তবে তা হবে গত দেড় যুগে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক নৌবহরের গাজা উপকূলে নোঙ্গর করার ঘটনা।
১১২ বার পড়া হয়েছে