মিসরে হামাস-ইসরায়েল পরোক্ষ আলোচনা শুরু, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা আশাবাদ

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দি বিনিময়ের লক্ষ্যে মিসরের শারম আল শেখে শুরু হয়েছে হামাস ও ইসরায়েলের পরোক্ষ আলোচনা।
এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার। যুক্তরাষ্ট্রের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর চাপ দেওয়া হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ইসরায়েল ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে, আর হামাসও কয়েকটি শর্ত মেনে নিয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গতকাল সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই আলোচনা আজ মঙ্গলবারও চলছে। আলোচনায় ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা। হামাসের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির সিনিয়র নেতা খলিল আল-হায়া। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক তৎপরতা
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট নিশ্চিত করেছেন, মিসরে শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি চান। আমরা দ্রুত অগ্রগতি আশা করছি।"
ট্রাম্প নিজেও এক পোস্টে বলেন, "এই সপ্তাহান্তে হামাসের সঙ্গে অত্যন্ত ইতিবাচক কথা হয়েছে। গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।"
বন্দি বিনিময়ে অগ্রগতি
ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। হামাস ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় এই আলোচনার ভিত্তি তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক রেডক্রস জানিয়েছে, বন্দি বিনিময় ও গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে তারা প্রস্তুত।
সমালোচনার মুখে ইসরায়েলের হামলা
তবে যুদ্ধের মধ্যেই আলোচনা কিছুটা জটিল হয়ে পড়ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রবিবার ইসরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বোমা হামলার মধ্যে বন্দি বিনিময় সম্ভব নয়।” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন, যদিও এখনো হামলা বন্ধ হয়নি।
গাজা যুদ্ধের দুই বছর
আজ (মঙ্গলবার) গাজা সংঘাতের দুই বছর পূর্ণ হলো। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত এই হামলায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান হতে পারে। মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ বলছে, এই আলোচনা একটি “বাস্তব ও টেকসই” যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে