সর্বশেষ

সারাদেশ

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি: রংপুর অঞ্চলে বন্যা, হাজারো পরিবার পানিবন্দি

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ২:১২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
তিস্তা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি এবং উজানের ঢলের কারণে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে রোপা আমন, সবজি এবং মাসকলাইয়ের ক্ষেত।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও তা এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে আগামী তিন দিনে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

 

রবিবার রাতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার (৫২.১৫ সেন্টিমিটার) ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া এবং লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে।

পাউবো আগাম সতর্কতা দিয়ে জনসাধারণকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বললেও ততক্ষণে অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। গঙ্গাচড়ার সাতটি ইউনিয়নে অন্তত চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে গবাদি পশু ও আসবাবসহ নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।

নোহালী ইউনিয়নে ৮০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে ১২০০ পরিবারের একই অবস্থা বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে রংপুরে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি ও আকস্মিক ঝড়ে আলমবিদিতর ও নোহালী ইউনিয়নে প্রায় ৭০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টিনের ঘর ও আধাপাকা বাড়ি ভেঙে গেছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা খোলা জায়গায় বই-খাতা শুকাতে দেখা গেছে।

প্রশাসন থেকে জানানো হয়, দুর্গতদের জন্য ৮ টন চাল ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে।

পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রবল পানির তোড়ে ৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক, একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। প্রায় ১০ হেক্টর আমন ও বাদামের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীতে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদে হাজার হাজার গাছের গুঁড়ি ভেসে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভুটানের কালজানি ও ভারতের হাসিমারা বনাঞ্চল থেকে এসব গাছ ভেসে এসেছে। নাগেশ্বরীতে গাছ তুলতে গিয়ে পানিতে পড়ে মনছুর আলী (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে টানা বৃষ্টিতে আগাম আমন ধান, আলু ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফ আব্দুল্লাহ জানান, কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতায় পাকা ধান নষ্ট হচ্ছে, আলুর বীজ পচে যাচ্ছে।

সোমবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী তিন দিন দেশের উত্তরাঞ্চল ও ভারতের উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারের পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মার পানি সামান্য বাড়তে পারে, তবে তা বিপৎসীমার নিচেই থাকবে।

১১৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন