সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

অমানবিক নির্যাতন করেছে ইসরাইল, ফ্লোটিলায় এখনও বন্দীদের কি দশা?

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ৭:২০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গাজার উদ্দেশে ত্রাণবাহী 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' থেকে আটক হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মুক্তি পাওয়া একাধিক অধিকারকর্মী।

ইস্তাম্বুল, রোম ও মিলানে পৌঁছে তাঁরা জানান, বন্দিত্বের সময় তাঁদের প্রতি অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে।

আটক থাকা অবস্থায় অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসে থাকার কথা জানান। কাউকে মারধর করা হয়েছে, কাউকে আবার শৌচাগারের পানি খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছে। তিন দিন পর্যন্ত কোনো খাবার বা ওষুধ পাননি বলেও অভিযোগ ওঠে।

ইতালির রোমে পৌঁছে অধিকারকর্মী চেজারে তোফানি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ভয়ংকর ব্যবহার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী এবং পরে পুলিশ উভয়ের কাছেই আমরা নিপীড়নের শিকার হই।’
মিলানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইতালির ইসলামিক কমিউনিটিজ ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াসিন লাফরাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর অস্ত্র তাক করা হয়েছিল। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন আচরণ অকল্পনীয়।’

ফ্লোটিলায় থাকা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে ছিলেন পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যসহ আরও অনেকে।

মালয়েশিয়ান অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী হেলিজা হেলমি ও তাঁর বোন হাজওয়ানি হেলমিও ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। হাজওয়ানি বলেন, ‘শৌচাগারের পানি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। কেউ কেউ অসুস্থ ছিল, অথচ জবাব ছিল— “তারা মরেছে নাকি?”’
হেলিজা জানান, ‘তিন দিন না খেয়ে ছিলাম। ১ অক্টোবর খাওয়ার পর আজই প্রথমবার কিছু খাচ্ছি।’

ইতালির সাংবাদিক লরেনজো ডি’আগোস্তিনো বলেন, ‘ইসরায়েলিরা আমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ও অর্থ চুরি করেছে। আমাদের কুকুর দিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে, বন্দুকের লেজার তাক করে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে।’

এর আগে ফ্লোটিলা থেকে ছাড়া পাওয়া কর্মীরা অভিযোগ করেন, গ্রেটা থুনবার্গকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁকে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করা হয় এবং মিথ্যা প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এসব অভিযোগ অস্বীকার না করে বরং বন্দীদের সঙ্গে কঠোর আচরণের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি গর্বিত যে আমরা ফ্লোটিলা কর্মীদের সন্ত্রাসবাদের সমর্থকদের মতো করে নিয়েছি। যারা সন্ত্রাস সমর্থন করে, তাদের সেভাবেই আচরণ করা উচিত।’

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য ভিন্ন সুরে জানিয়েছে, আটককৃতদের সঙ্গে আইনি অধিকার অনুযায়ীই আচরণ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন দেশের সরকার, মানবাধিকার সংস্থা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান, তুরস্ক, কলম্বিয়াসহ একাধিক দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং গ্রিস আনুষ্ঠানিক নোট দিয়েছে।

ফ্লোটিলার প্রায় ৪৫০ জন যাত্রীকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছিল। এখন পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে অনেককে মুক্তি দেওয়া হলেও, আরও অনেকে এখনো ইসরায়েলে আটক রয়েছেন। তাদের কি অবস্থা করছে ইসরাইলিরা সে খবর এখনও সবার অজানা।

১১৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন