অবহেলা, বৈষম্য ও বঞ্চনায় শিক্ষকরা আজ রাজপথে : সংকটে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা

রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ২:৪৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস। অথচ দেশের শিক্ষক সমাজ এই দিবসে উদযাপনের বদলে বঞ্চনা ও অবহেলার চিত্র তুলে ধরে প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে।
বছরের পর বছর ধরে ন্যায্য বেতন, পেনশন ও সম্মানজনক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত শিক্ষকরা বলছেন— তাদের অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে, যা গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দেশে এমন হাজারো শিক্ষক আছেন, যারা বিনা বেতনে ক্লাস নিচ্ছেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পান দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম বেতন। একজন প্রাথমিক শিক্ষক মাসে গড়ে পান মাত্র ১৭০ ডলার, যেখানে মালদ্বীপে এই অঙ্ক ৯৫০ ডলারের বেশি। এমনকি পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং মিয়ানমারেও শিক্ষকদের বেতন বাংলাদেশের চেয়ে বেশি।
বর্তমানে দেশে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। তারা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান—যেখানে অষ্টম শ্রেণি পাস একজন সরকারি ড্রাইভারের বেতন গ্রেড ১২তম। এ বৈষম্য থেকেই শিক্ষকরা নিয়মিত আন্দোলনে নামছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আরও করুণ পরিস্থিতির শিকার। মাসিক ১২-১৩ হাজার টাকা বেতনে চাকরি শুরু করে তারা অবসরে গিয়ে পেনশনের টাকা পেতেও হয়রানির শিকার হন। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকও বেতন পান প্রাথমিক শিক্ষকদের চেয়েও কম।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মনজুর আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষাখাতে কার্যকর কোনো সংস্কার না হওয়ায় আজ এ অবস্থা। শিক্ষা খাত এখন রাজনৈতিক ব্যর্থতার বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতীয়করণ, বেতন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষকরা আজ শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেছেন। তাদের দাবি— শিক্ষকদের ন্যায্য মর্যাদা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়।
১০৮ বার পড়া হয়েছে