সর্বশেষ

ফেবু লিখন

স্মৃতিচারণ: ডক্টর এ এম এম শওকত আলী

কাজী আখতার হোসেন
কাজী আখতার হোসেন

বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫ ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ডক্টর এ এম এম শওকত আলী। সাবেক সিএসপি। আরেক ভাই এম আখতার আলী তিনিও সিএসপি ছিলেন।দুই জনই এখন পরলোকে। শওকত স্যার সম্ভবত মাস ছয়েক আগে মারা যান।

শওকত আলী সাহেব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ছিলেন।। মৃত্যুর পর এই কথা উল্লেখ করেই পত্রিকার কোনায় সংবাদটি ছাপা হয়েছিল।


আমি তখন আমার প্রথম কর্ম স্থল পাবনাতে এনডিসি হিসেবে কর্মরত । প্রেসিডেন্ট জেনারেল এরশাদ ঈশ্বরদীর সাহাপুরে আসবেন কৃষক সম্মেলনে। শওকত আলী স্যার এলেন তিনি তখন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার।
সরকার প্রধান এলে বিভাগীয় কমিশনার কে আসতেই হয়। তিনি এলে আমি এবং ডিসি রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া তাকে অভ্যর্থনা জানাই। ইতোমধ্যে সশস্ত্র ধারার বাম রাজনীতিতে বিশ্বাসী আলাউদ্দিন সাহেব এবং তার স্ত্রী আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলেন।


মতিন -আলাউদ্দিন নামে তারা পরিচিত ছিলেন একসময়। এখন আর ওনাদের কথা তেমন শুনি না। বরং অবাক হয়ে দেখলাম টিপু বিশ্বাস যমুনাতে সংস্কার কমিশনের কোন কোন বৈঠকেও বোধহয় উপস্থিত ছিলেন।

ইতোমধ্যে এই সমাবেশ উপলক্ষে জনসভায় লোকসমাগম ভরে গেছে। আমার ডিসি বিভাগীয় কমিশনার ও আমি বসে আছি। শওকত আলী স্যার বললেন আপনারা কি খুব প্রোটোকল মাইন্ডেড ?
আমরা কি উত্তর দেব অতটা না বুঝে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।


অতঃপর উনি যা বললেন সেই গল্পটি নিম্নরূপ-


তিনি তখন সিলেটের জেলা প্রশাসক। সিলেট মানে সেই সময়ের অবিভক্ত সিলেট জেলা। তখনকার মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ সিলেটে গিয়েছেন। সার্কিট হাউজে পৌঁছেই তিনি জেলা প্রশাসক কোথায় জানতে চাইলেন এবং বললেন ওনাকে আসতে বলুন।


জেলা প্রশাসক শওকত আলী তখন সুনামগঞ্জে সফরে ছিলেন এবং সেখানেই তাকে খবর দেয়া হলো চলে আসার জন্য। যেহেতু মন্ত্রী বলেছেন তাই তিনি চলে এলেন।


এসেই তিনি সার্কিট হাউজে মন্ত্রীর কক্ষে ঢুকে জানতে চাইলেন কেন তাকে আসতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী বললেন না আমি এসেছি তাই আপনার তো থাকার দরকার। শওকত আলী স্যার বললেন সুনামগঞ্জে আমি একটা পূর্ব- নির্ধারিত অত্যন্ত জরুরী কাজে ব্যস্ত ছিলাম আপনি আমাকে এভাবে বিনা কারণে এখানে ডেকে আনলেন কেন, এতে সময় ও কাজের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।


তাছাড়া আপনি তো মাঝে মাঝেই সিলেট আসেন এবং আপনার সঙ্গে মাঝে মাঝেই টেলিফোনে কথা হয় এমন কোন জরুরি কোন ব্যাপার ছিল না।


এভাবেই মন্ত্রীর মুখের উপর উনি অনেক কথা বলে দিলেন।


এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে উনি প্রটোকল সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের একটি ছবক দিলেন।


অন্যদিকে আরেকবার আরেক সিএসপি পাবনাতে ট্যুরে আসলে ওনার সঙ্গে ঘরের মধ্যে কথা হচ্ছিল। তিনি জ্ঞান দিলেন সিনিয়র অফিসার যতই না না করুক মনে করবেন সেটাই হা ধরে নিতে হবে। তার থাকা খাওয়া ভালো হয় সব সময় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে তিনি সেটা যদি নাও চান।


এভাবেই চাকরি জীবনের প্রথম দিকে আমরা একে একে অনেক কিছুই শিখছিলাম। আবার মাঝে মাঝে সবকিছু গুলিয়ে যেত।


পরবর্তীকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সময় পরোক্ষভাবে ডক্টর এএম এম শওকত আলীর সঙ্গে অনেক কাজ করতে হয়েছে। শুনেছি উনি কখনো কখনো খুব রেগে যেতেন। তবে আমি সে পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। সার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন।


বিএডিসিতে কাজ করার সময় আমাদের বন্ধু মহিউদ্দিন পান্নু উনার সঙ্গে একবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে শুনেছিলাম।


এখন উনি সকল প্রটোকল এর উর্ধ্বে।

 লেখক: সাবেক সচিব।
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে) 

১২১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
ফেবু লিখন নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন