বিসিবি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক: সভাপতির স্বাক্ষরিত চিঠিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৬:০৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনের প্রক্রিয়া ঘিরে ফের নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে চলমান প্রক্রিয়ায় হঠাৎ বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ক্রীড়া অঙ্গনে।
১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবি সভাপতি স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে যেসব জেলা ক্রীড়া সংস্থা অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়ন দেয়নি, সেগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে নতুন করে অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে কাউন্সিলর মনোনয়নের অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)-এর বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করা হলেও, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবির সাবেক পরিচালক সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর।
তিনি বলেন, "বিসিবির বিদ্যমান গঠনতন্ত্রে এনএসসির হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও সে রকমই।"
বিসিবির গঠনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী, বোর্ডের কোনো চিঠি সাধারণত সিইওর স্বাক্ষরে ইস্যু হয়। ১ সেপ্টেম্বর সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীর স্বাক্ষরেই প্রথম চিঠি পাঠানো হয়েছিল বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায়। কিন্তু এবার হঠাৎ করে সভাপতির স্বাক্ষরে চিঠি ইস্যু হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে বোর্ডের অভ্যন্তরেই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিইও নিজামউদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপরদিকে বিসিবি সভাপতি বুলবুলের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতিটি জেলা বা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে একজন সাবেক খেলোয়াড় বা ক্রীড়া সংগঠককে কাউন্সিলর হিসেবে মনোনীত করার কথা। অথচ এবার অনেক জেলা অ্যাডহক কমিটি থেকেও কাউন্সিলর মনোনয়ন না দেওয়ায় বোর্ড তাদের বাতিল করে দিয়েছে।
সংগঠক মহলে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিএসওএ) ইতোমধ্যে বিসিবি সভাপতির চিঠির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং জেলা ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে।
৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিসিবি নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হলেও এখনো কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তাকে মিডিয়ায় কথা বলার বিষয়ে বিসিবি থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
সাবেক পরিচালক সিরাজউদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, "সভাপতির পদের সম্মান রক্ষিত হচ্ছে না। তিনি এমন একটি নজির স্থাপন করলেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে যা করা হচ্ছে, তা দেশের ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকর।"
এবার কাউন্সিলর জমা দেওয়ার সময়সীমা দুইবার বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বিসিবির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি, বরং বিভিন্ন মহলের মতবিরোধে তা আরও জটিল আকার নিচ্ছে।
১১২ বার পড়া হয়েছে