সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

চীনের ‘সল্ট টাইফুন’ সাইবার হামলা: ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৮০টিরও বেশি দেশ

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:৪৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চীন সমর্থিত একটি হ্যাকিং গ্রুপ ‘সল্ট টাইফুন’ গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বজুড়ে নজিরবিহীন সাইবার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ৮০টিরও বেশি দেশের সরকারি, সামরিক এবং ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর একটি যৌথ তদন্ত রিপোর্ট।

এই সাইবার হামলাগুলোতে টেলিযোগাযোগ, পরিবহন, আবাসন ও সামরিক অবকাঠামোর পাশাপাশি নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হামলা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি নাগরিকের তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।


সল্ট টাইফুন গ্রুপ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ মেধাস্বত্ব, চিপ ডিজাইন, যোগাযোগ তথ্য এবং এমনকি রাজনীতিকদের ফোন কথোপকথন পর্যন্ত সংগ্রহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারকালীন সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ ডেমোক্র্যাট নেতাদের ফোনে আড়িপাতার ঘটনা তদন্তে উঠে এসেছে।

এফবিআই’র সাবেক সাইবার শাখা প্রধান সিনথিয়া কাইজার বলেন, “এই হামলার পরিধি এতটাই ব্যাপক যে, এর বাইরে কেউ রয়ে গেছে—এটা কল্পনাও করা যায় না।”

তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, কমপক্ষে তিনটি চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি এ হ্যাকিং অভিযানে সরাসরি জড়িত এবং তারা ২০১৯ সাল থেকে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এসব কোম্পানি চীনের সামরিক ও বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় কাজ করছে।


সিআইএর ডিজিটাল উদ্ভাবন বিভাগের সাবেক উপপরিচালক জেনিফার ইউব্যাংক বলেন, “সল্ট টাইফুন চীনের সাইবার সক্ষমতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তারা ধাপে ধাপে বিশ্বের অবকাঠামোয় প্রবেশ করে গোয়েন্দা নজরদারির জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করছে।”

চীনের আগের সাইবার অভিযানগুলোর তুলনায় এই হামলাগুলোর প্রযুক্তিগত পরিশীলন, ধৈর্য ও কৌশল অনেক বেশি সুসংগঠিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, জাপানসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়ে এসব সাইবার হামলার জন্য সরাসরি চীনকে দায়ী করেছে। হামলাগুলোকে ‘নির্বিচার’ এবং ‘লাগামহীন’ বলে বর্ণনা করেছে ব্রিটিশ ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের এই কার্যক্রম বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।


বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে চীন শুধু তথ্য চুরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না; বরং বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য বদলাতে সাইবার প্রযুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা অ্যান নেউবারগার এক নিবন্ধে লিখেছেন, “সল্ট টাইফুন চীনের বিচ্ছিন্ন কোনো সাফল্য নয়, বরং এটি দেখায় কীভাবে দেশটি ডিজিটাল যুদ্ধক্ষেত্রে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়।”

চীন এখনো এসব অভিযোগের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব দেয়নি। তবে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ সাইবার অভিযান বিশ্বব্যাপী নজরদারি, প্রভাব বিস্তার এবং রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের জন্য চীনের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলেরই অংশ।

১০৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন