সর্বশেষ

অর্থনীতি

ইলিশ রপ্তানি অনিশ্চয়তায়, মোকামে দাম কমলেও বাজারে নেই প্রভাব

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৩:১১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিলেও মাঠ পর্যায়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। রপ্তানি শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারি মোকামগুলোতে ইলিশ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।

ফলে রপ্তানির আশা ঘিরে বাড়তি দামে কেনা মাছ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাইকার ও আড়তদাররা।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে ইলিশ রপ্তানি করলে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। কারণ, দেশি বাজারে ইলিশের দাম রপ্তানিমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। এর সঙ্গে পরিবহন ও প্যাকেটিং খরচ যোগ হলে লোকসান আরও বাড়ছে।

রপ্তানিকারকরা বাজার থেকে ইলিশ না কেনায় গতকাল শুক্রবার বরিশালের পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন মোকামে ইলিশের দাম প্রতি মণে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে ইলিশের দাম।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হলেও বাস্তবে অনেক প্রতিষ্ঠানই রপ্তানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করেছে ১২.৫ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা। তবে দেশের বাজারে ৬০০ গ্রাম বা তার বেশি ওজনের ইলিশের পাইকারি দামই ২ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

মাছ সংগ্রহ, প্যাকেটিং এবং বেনাপোল পর্যন্ত পরিবহন খরচ যোগ করলে কেজিপ্রতি অতিরিক্ত ১০০ থেকে ১৩০ টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে নির্ধারিত দামে রপ্তানি করলে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

এদিকে কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, রপ্তানির অনুমতির আগেই চোরাই পথে বিপুল পরিমাণ ইলিশ ভারতে পাচার হওয়ায় সেদেশের বাজারে এখন ইলিশের সরবরাহ পর্যাপ্ত। যার ফলে ভারতীয় আমদানিকারকরা নতুন করে ইলিশ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

বরিশালের পোর্ট রোড মোকামের মাহিমা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক বাবর আলী জানান, রপ্তানিকারকরা মাছ না কেনায় আড়তদার ও পাইকাররা বিপাকে পড়েছেন। গত দুই দিন ধরে মোকামে অনেক ইলিশ বিক্রি হয়নি। একই পরিস্থিতি দেখা গেছে বরগুনার পাথরঘাটা মোকামেও।

রপ্তানি অনুমতি পাওয়া পাবনার সেভেন স্টার ফিশিং প্রসেসিং করপোরেশনের প্রতিনিধি কামাল হোসেন জানান, তাদের দুটি ইলিশবোঝাই ট্রাক দুই দিন বেনাপোলে অপেক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত মাছ যশোরে বিক্রি করতে হয়েছে।

শুক্রবার পোর্ট রোড মোকামে ৭০০–৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১ হাজার ৮৮০ টাকায়, যা রপ্তানি শুরুর দিন ছিল ২ হাজার টাকা। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ২ হাজার ১৫০ টাকায়, আগের দিনের তুলনায় কেজিপ্রতি ৫০ টাকা কম দরে।

মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলাম আকন্দ জানিয়েছেন, এ বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ চোখে পড়ার মতো কম। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে।

তিনি আরও জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও আশ্বিনের অমাবস্যা ও পূর্ণিমার মাঝামাঝি সময়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আসছে। অর্থাৎ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই ইলিশ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে, যা এ বছরের ভরা মৌসুমেরও শেষ নির্দেশ করে।

১০৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন