আফগানিস্তানে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ

শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে নারীদের লেখা শতাধিক বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একইসঙ্গে মানবাধিকার, লিঙ্গবৈষম্য এবং যৌন হয়রানি বিষয়ক পাঠদানের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যতালিকা পর্যালোচনার জন্য গঠিত একটি কমিটি জানিয়েছে, মোট ৬৭৯টি বইকে 'শরিয়াহ ও তালেবান নীতির পরিপন্থী' হিসেবে চিহ্নিত করে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৪০টি বই নারীদের লেখা, যার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক গ্রন্থ ‘সেফটি ইন দ্য কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি’।
নিষিদ্ধ হওয়া ১৮টি বিষয়ের মধ্যে অন্তত ছয়টি নারীদের উন্নয়ন ও ভূমিকা সংক্রান্ত, যেমন ‘জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’, ‘দ্য রোল অব উইমেন ইন কমিউনিকেশন’ এবং ‘উইমেন’স সোসিওলজি’। কমিটির একজন সদস্য বিবিসিকে বলেন, “নারীদের লেখা কোনো বই এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো যাবে না।”
এছাড়া ইরানি লেখক ও প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বইও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যালোচনা কমিটির মতে, “পাঠ্যসূচিতে ইরানি বিষয়বস্তুর অনুপ্রবেশ ঠেকানোই এই নিষেধাজ্ঞার অন্যতম উদ্দেশ্য।” তালিকাভুক্ত বইগুলোর মধ্যে ৩১০টিরই উৎস ইরান।
তালেবান সরকারের দাবি, এসব সিদ্ধান্ত শরিয়াহ্ ও আফগান সংস্কৃতির আলোকে নেওয়া হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব পদক্ষেপ নারীদের শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে অংশগ্রহণকে কার্যত অসম্ভব করে তুলছে।
তালেবান ২০২১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারীদের ওপর একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ষষ্ঠ শ্রেণির পর নারীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ এবং ২০২৪ সালে ধাত্রীবিদ্যা কোর্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়—যা ছিল নারীদের পেশাগত প্রশিক্ষণের শেষ সুযোগ।
সম্প্রতি দেশটির অন্তত ১০টি প্রদেশে ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, “অনৈতিক কর্মকাণ্ড” রোধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে