শীর্ষ সন্ত্রাসী লিপটনের জামিনে কুষ্টিয়ায় জনমনে আতঙ্ক

বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:৩৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, জাসদ গণবাহিনীর সাবেক মাস্টারমাইন্ড ও ছাত্রলীগের দুর্ধর্ষ ক্যাডার থেকে চরমপন্থীতে রূপ নেওয়া জাহাঙ্গীর কবির লিপটন আলোচিত অস্ত্র মামলায় জামিন পাওয়ায় কুষ্টিয়া জুড়ে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ৬ জুন সেনাবাহিনীর অভিযানে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানাধীন দুর্বাচারা গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে পাঁচটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ লিপটন ও তার তিন সহযোগীকে আটক করা হয়। পরদিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় মামলা হয় এবং তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। সেনা অভিযানের দিন লিপটনের ছোট ভাই উপসচিব আলমগীর কবির বায়রনও উপস্থিত ছিলেন এবং সেনা সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
লিপটন গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগীরা একের পর এক হত্যা ও হামলার মামলা দায়ের করেন। ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও শৈলকুপা থানায় তার নামে হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলায় একাধিকবার আদালতের নির্দেশে তাকে পুনরায় আটক দেখানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৯ সালের সাদ্দাম বাজারের ট্রিপল হত্যা, ভারতের নদীয়া জেলায় একাধিক হত্যাকাণ্ড, কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ও লক্ষীপুর এলাকায় হত্যার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে লিপটন দীর্ঘদিন এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলেন। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, ভিন্নমতের ছাত্রদের ওপর হামলা, আন্দোলন দমনে পুলিশের সঙ্গে থেকে গুলি চালানোসহ অসংখ্য অপরাধে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আওয়ামী লীগের পতনের পর তাকে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভায় ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।
লিপটনের মুক্তির প্রতিবাদে ইতোমধ্যেই কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। তারা তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছে। তবে মাত্র তিন মাসের মাথায় আলোচিত অস্ত্র মামলায় জামিন পাওয়ায় ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি কুষ্টিয়ার বিভিন্ন আদালত থেকে একাধিক চাঞ্চল্যকর হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামি দ্রুত জামিন পাচ্ছেন। এতে এলাকায় নতুন করে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাদীপক্ষের অভিযোগ, জামিন পাওয়া সন্ত্রাসীরা বের হয়েই হুমকি দিচ্ছে এবং পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী বলেন, “সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ ধরা পড়া সন্ত্রাসী যদি সহজেই জামিনে বেরিয়ে আসে, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদে থাকবে?”
এ নিয়ে কুষ্টিয়ার সর্বস্তরে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে