সর্বশেষ

রাজনীতি

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায় জামায়াত : বিতর্কে দিল্লি

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৭:৩১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভারতের কূটনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনায় এসেছে এক পুরনো নাম – জামায়াতে ইসলামী।

দলটির রাজনৈতিক অবস্থান, অতীত ভূমিকা ও সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে এখন দিল্লির নীতিনির্ধারকদের মধ্যে চলছে জোর বিতর্ক।

এক সময় ভারতের কাছে রাজনৈতিকভাবে একেবারেই ‘অস্পৃশ্য’ বলে বিবেচিত জামায়াত, বর্তমানে বাংলাদেশে নতুন করে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচনেও দলটির সমর্থকরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে অনেকেই জামায়াতকে দেখছেন ‘একটি নতুন সংস্করণের দল’ হিসেবে — ‘জামায়াত ২.০’।

ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত সম্প্রতি ঢাকায় সফর করেন এবং জামায়াত, বিএনপি, এনসিপি-সহ বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি জানতে চান — “সরকার গঠনের সুযোগ এলে কি জামায়াত বাংলাদেশে শরিয়া আইন চালু করতে চাইবে?”

ড. তাহেরের জবাব ছিল, “এটা আবার কোথা থেকে শুনলেন? আমরা কখন বলেছি জিতলে শরিয়া আইন চালু করব?”

মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুললে, জামায়াত নেতা দাবি করেন, দলটির সিনিয়র নেতারা অতীতে একাত্তরের ভূমিকার জন্য খোলামেলাভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

শ্রীরাধা দত্তের মতে, জামায়াতের তরুণ নেতৃত্ব এখন জিনস-টি-শার্ট পরে টেলিভিশনে অংশ নিচ্ছে, আধুনিক ভাষায় কথা বলছে, এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথাও বলছে। দলটি বলছে, “ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী — এটা মানতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।”

চট্টগ্রাম অস্ত্র পাচার মামলা, ২০০১–২০০৬ সময়কালের বিভিন্ন ভারতবিরোধী ঘটনার প্রসঙ্গ তুললে জামায়াত নেতারা স্পষ্টই বলেন, “সেই সব ঘটনায় আমাদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারলে বলুন!”

শ্রীরাধা দত্ত মন্তব্য করেন, “জামায়াত এখন কার্যত ‘চার্ম অফেনসিভে’ নেমেছে – কথায় তারা মুগ্ধ করে, কিন্তু বাস্তবে কী করছে, সেটাই এখন প্রশ্ন।”

তবে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জামায়াতের এই নতুন চেহারাকে একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না।

তার ভাষায়, “তাদের হাতে রক্ত লেগে আছে – ১৯৭১ সালের গণহত্যায় তাদের ভূমিকা ভুলে যাওয়া যাবে না।”

তিনি আরও বলেন, “জামায়াত আসলে মুসলিম ব্রাদারহুডের অংশ — তারা বাংলাদেশেই শুধু নয়, পাকিস্তান, মিশরসহ বিভিন্ন দেশে একই আদর্শে বিশ্বাসী। চিতাবাঘ যেমন গায়ের দাগ পাল্টায় না, জামায়াতও তাদের আসল চরিত্র বদলাতে পারবে না।”

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে জামায়াতের শক্তি বৃদ্ধি এবং তাদের অবস্থানগত পরিবর্তনের দাবি দিল্লিকে একটি কূটনৈতিক দ্বিধার মুখে ফেলেছে।

জামায়াতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে রাখা সম্ভব কিনা, নাকি নতুন বাস্তবতায় নতুন করে মূল্যায়ন দরকার – এই প্রশ্ন এখন ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।

একদিকে জামায়াতের ‘নতুন বার্তা’ ও সম্পর্কোন্নয়নের আগ্রহ, অন্যদিকে অতীতের রক্তাক্ত ইতিহাস – দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে পেতেই হবে ভারতকে।

১১০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
রাজনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন