পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের দাম কেমন

বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৭:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দুর্গাপূজার আগমনী সুরের সাথে সাথে কলকাতার বাজারে হাজির হয়েছে বাংলাদেশ থেকে আসা বহু প্রতীক্ষিত পদ্মার ইলিশ।
তবে মাছ এলেও স্বস্তিতে নেই খুচরা ব্যবসায়ীরা। কারণ, একদিকে যেমন পদ্মার ইলিশের দাম ছুঁয়েছে আকাশ, অন্যদিকে গুজরাটের তুলনামূলক সস্তা ইলিশে বাজারে তৈরি হয়েছে প্রতিযোগিতা।
প্রথম দফায় মঙ্গলবার রাতে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় এসেছে ৩৮ মেট্রিক টন ইলিশ, যা পৌঁছায় হাওড়ার পাইকারি বাজারে বৃহস্পতিবার ভোরে। এরপরই বাজারে শুরু হয় নিলাম, যেখানে অংশ নেন কলকাতা ও শহরতলীর বিভিন্ন খুচরা মাছ ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রথম দিন ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশের পাইকারি দর ছিল ১৫০০–১৭০০ টাকা, আর ১ কেজির বেশি ওজনের মাছ বিকোচ্ছে ১৮০০–২০০০ টাকায়। ফলে খুচরা বাজারে সেই দাম গিয়ে দাঁড়াতে পারে ২০০০ টাকার ঘরে বা তারও বেশি।
বাঘাযতীনের এক খুচরা মাছ ব্যবসায়ী বলেন, “আমি ১৬০০ রুপি বলেছিলাম, কিন্তু পাইকারি বাজারে ১৭০০ রুপির নিচে দিচ্ছে না। এত দামি মাছ এই বাজারে বিক্রি সম্ভব নয়।”
ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, বাজারে পদ্মার ইলিশের চাহিদা থাকলেও সেটি নষ্ট করছে গুজরাটের ইলিশ। কারণ সেখানে ৫০০–৬০০ রুপির মধ্যেই মিলছে ইলিশ। ফলে সাধারণ ক্রেতারা এত দাম দিয়ে পদ্মার ইলিশ কিনতে চাইছেন না।
কাঁচরাপাড়ার এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, “গুজরাটের ইলিশের সঙ্গে দামের ব্যবধান অনেক। অন্যান্য বছর যেখানে ৫০–১০০ কেজি মাছ নিতাম, এবার ২৯ কেজি নিচ্ছি। যে ৫০০ রুপিতে ইলিশ পেয়েছে, সে ২০০০ রুপির মাছ নেবে না।”
উত্তর কলকাতার এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, “অনেক ক্রেতাই শুধু বাংলাদেশের ইলিশ খেতে চান, তাই চাহিদা থাকলেও আমরা ঝুঁকি নিয়ে কম পরিমাণে ইলিশ তুলছি। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যে আরও মাছ এলে দাম কিছুটা নামবে।”
ইলিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ মাকসুদ আনোয়ার জানালেন, “বাংলাদেশে এই সময় ইলিশের ল্যান্ডিং কম। ফলে জোগানও কম। উপরন্তু, ৫ অক্টোবর পর্যন্তই বাংলাদেশ ইলিশ রপ্তানি করবে। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১২০০ মেট্রিক টন রপ্তানির অনুমতি দিলেও এত কম সময়ে ৫০০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ রপ্তানি হওয়া কঠিন।”
সবমিলিয়ে, এবারের দুর্গাপূজা যতই কাঁটায় কাটুক, কলকাতার ইলিশপ্রেমীদের জন্য পদ্মার ইলিশ পাওয়া যেন এক মিষ্টি স্বপ্নের মতোই থাকছে। তবে সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার খরচ গুনতে গিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ছে সাধারণ ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের। দাম কমবে কি না, তা নির্ভর করছে পরবর্তী ক'দিনের আমদানি ও বাজার পরিস্থিতির উপর।
১২৯ বার পড়া হয়েছে