বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম

বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:২৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরায় ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, গ্রস রিজার্ভ (মোট রিজার্ভ) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলারে, যা এর আগের ছিল ৩০ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) নির্ধারিত হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুসারে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারে; আগের হিসাবে যা ছিল ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভের (Net Reserve) একটি ভিন্ন হিসাব রয়েছে, যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে নিট রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়ার পেছনে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রেখেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সর্বশেষ, গত ৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং ২ সেপ্টেম্বর আটটি ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কেনা হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার (প্রায় ৩০,২৩৯ কোটি টাকা)। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার (প্রায় ২৯,৫৪৮ কোটি টাকা)। এর আগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। পুরো অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
গত এক দশকে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ২০১৩ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে এবং অক্টোবরে তা পৌঁছায় ৪০ বিলিয়নে। ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রেকর্ড করা হয়। তবে পরবর্তীকালে ডলার সংকট ও আমদানি ব্যয়ের চাপে রিজার্ভে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের রিজার্ভ কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা রাখলে তা নিরাপদ ধরা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেই সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
১০৫ বার পড়া হয়েছে