দৌলতদিয়ায় ফেরি সংকট,ঘাটে ৩ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১:২৭ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চলমান আন্দোলনের কারণে হঠাৎ করেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়ে গেছে।
তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পদ্মা নদীর তীব্র স্রোত ও ফেরিঘাট সংকট। ফলে দৌলতদিয়া ঘাটে যানজটের তীব্রতা বেড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পণ্যবাহী ট্রাক এবং যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাকের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসও আটকে পড়েছে অন্তত দেড় কিলোমিটারজুড়ে।
ঘাটে অপেক্ষারতদের দুর্ভোগ
সিরিয়ালে আটকে থাকা এক ট্রাকচালক মো. মন্টু মিয়া জানান, তিনি সোমবার রাত ১২টার দিকে ঘাটে এসে পৌঁছেছেন, কিন্তু এখনও ফেরিতে উঠতে পারেননি। ঠিক কখন ফেরিতে উঠতে পারবেন, সে বিষয়ে কেউ কিছু জানাতে পারছে না।
এদিকে, যাত্রীবাহী বাসে থাকা যাত্রীরাও পড়েছেন বিপাকে। মহেশপুর থেকে আসা রয়েল পরিবহনের যাত্রী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার দিকে দৌলতদিয়ায় পৌঁছেছেন, কিন্তু তিন ঘণ্টা পার হলেও ফেরির নাগাল মেলেনি। তার বাসে অসুস্থ রোগী ও বিদেশগামী যাত্রী রয়েছেন, অনেকেই হাল ছেড়ে দিয়ে বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
পচনশীল পণ্য ও যাত্রীবাহী বাস অগ্রাধিকার পাচ্ছে
যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক এবং যাত্রীবাহী বাসগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে, তবে যানবাহনের তুলনায় ফেরির সংখ্যা কম থাকায় পরিস্থিতি সহজ হচ্ছে না।
ঘাট ও ফেরি সংকট, নদীতে তীব্র স্রোত
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে বর্তমানে শুধু ৩ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। ১, ২, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ, আর ৭ নম্বর ঘাট পলি জমে যাওয়ায় ২৩ আগস্ট থেকে বন্ধ রয়েছে। রোববার রাত থেকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ফেরির ধাক্কায় প্লেট ভেঙে যাওয়ায় সেটিও বন্ধ হয়ে যায় এবং বর্তমানে মেরামতের কাজ চলছে।
স্রোতের তীব্রতায় ফেরি চলাচলে বিলম্ব
পদ্মা নদীতে বর্ষার স্রোত এতটাই তীব্র যে, সচল থাকা ফেরিগুলোও স্বাভাবিক ট্রিপ সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ সময় নিচ্ছে। ফলে যানবাহন পারাপারে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটছে।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আলিম দাইয়ান বলেন, "বর্তমানে কেবল একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। আমরা ঘাট মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি।"
সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন জানান, "ফরিদপুরের আন্দোলনের কারণে হঠাৎ যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে রয়েছে ঘাট সংকট ও নদীতে প্রবল স্রোতের সমস্যা। বর্তমানে ১০টি ফেরি চলাচল করছে, তবে সবকিছু মিলিয়ে স্বাভাবিক ট্রিপ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।"
১০৯ বার পড়া হয়েছে