শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে সরকারের দায়িত্ব: নাহিদ

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সরকারের একটি নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য না দিয়ে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়া তিনি ‘সন্তোষজনক’ মনে করছেন এবং আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে এই বিচারকাজে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। তিনি আরও বলেন, “এ মামলার হয়তো আমি শেষ সাক্ষী। আমার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে মামলাটি রায়ের দিকে এগোবে।”
তিনি দাবি করেন, “গণহত্যা, গুম, খুন, নির্যাতনের মতো অন্যান্য ঘটনাগুলোর বিচারও একই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
নির্বাচনের পর যেন বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। “এই মামলার রায় হয়ে গেলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক এবং আইনি দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াবে,” বলেন নাহিদ ইসলাম।
এদিকে, একইদিন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মামলার আরেক সাক্ষী মাহমুদুর রহমানের ওপর স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর জেরা শেষ না হওয়ায় নাহিদের সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিন সকালেই কারাগার থেকে আনা হয় মামলার অন্যতম আসামি এবং বর্তমানে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। তার উপস্থিতিতেই মামলার ১৬তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর আগে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১৫তম দিনে দীর্ঘসময় ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। ওই দিন ৪৬তম সাক্ষী মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর মামলার ১৪তম দিনে ছয়জন সাক্ষ্য দেন এবং এখন পর্যন্ত মোট ৪৬ জনের সাক্ষ্য রেকর্ড করেছে ট্রাইব্যুনাল। চৌধুরী মামুন নামের একজন সাক্ষী ২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন এবং ৪ সেপ্টেম্বর তার জেরা সম্পন্ন হয়। তিনি গণহত্যার বিষয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে ক্ষমা চান এবং বেশ কিছু নতুন তথ্য উত্থাপন করেন।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। মামলার অভিযোগপত্রে মোট পাঁচটি অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রয়েছে—
তথ্যসূত্র: ২,০১৮ পৃষ্ঠা
জব্দ তালিকা ও প্রমাণাদি: ৪,০০৫ পৃষ্ঠা
শহীদদের তালিকা ও বিবরণ: ২,৭২৪ পৃষ্ঠা
এ মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষী রয়েছেন।
১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
১০৮ বার পড়া হয়েছে