গাজা সিটিতে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা: নিহত অন্তত ৫১

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের প্রধান শহর গাজা সিটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ জন।
নিহতদের মধ্যে রয়েছে ছয় বছর বয়সী যমজ শিশু এবং তিনজন সাংবাদিক। বোমাবর্ষণের ভয়ে শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন লাখো বাসিন্দা।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটির সর্বোচ্চ আবাসিক ভবন ‘আল-ঘাফরি হাইরাইজ’ ধ্বংস করে দেয়। একের পর এক বিমান হামলার কারণে শহরের উত্তর ও পশ্চিমাংশে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল ১২ হামলাগুলিকে "অস্বাভাবিক তীব্র" বলে অভিহিত করেছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধুমাত্র জায়তুন এলাকায় আগস্ট মাসের শুরু থেকে ১,৫০০-এর বেশি বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শহরের অন্যান্য এলাকাও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টার ফ্রান্সেসকা আলবানিজে অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বিতাড়নের উদ্দেশ্যে ইসরায়েল ‘অপ্রচলিত অস্ত্র’ ব্যবহার করছে। তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে ইসরায়েল এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক মাধ্যমে একাধিক হামলার ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেন, “সন্ত্রাসের টাওয়ার” ধ্বংস করা হয়েছে। তবে তিনি এগুলোর সঙ্গে হামাসের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
সর্বশেষ হামলায় নিহত তিন সাংবাদিক হলেন—মোহাম্মদ আল-কুইফি (নাসর এলাকার প্রতিবেদক), আইমান হানিয়ে (ফটোগ্রাফার ও সম্প্রচার প্রকৌশলী), এবং ইমান আল-জামিলি। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৮০ জনে পৌঁছেছে, যা সাংবাদিকদের জন্য এটিকে ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী সংঘাতে পরিণত করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৩ মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৪,৯০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ১,৬৪,৯২৬ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মরদেহ চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে