দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টাকে মণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:৪৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।
সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক সৌজন্য সাক্ষাতে তাঁরা এই আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে নেতৃবৃন্দ দুর্গাপূজার প্রস্তুতি, সার্বিক অবস্থা ও প্রশাসনিক সহযোগিতার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। তাঁরা জানান, চলতি বছরে সারাদেশে এক হাজারেরও বেশি নতুন পূজা মণ্ডপ স্থাপিত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "আপনাদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও তা সবসময় হয়ে ওঠে না। পূজা উপলক্ষে দেখা হওয়াটা আমার কাছে আনন্দের ব্যাপার।"
হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব পর্যায় থেকে এবারের পূজায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়, প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী সক্রিয়ভাবে পাশে রয়েছে। বিশেষ করে ধর্ম উপদেষ্টা ও সচিবের আন্তরিক ভূমিকার জন্য তাঁরা ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, “গত বছর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি ও বক্তব্য আমাদের গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় নয়, সামাজিক সম্প্রীতির মধ্য দিয়েই পূজা হওয়া উচিত।’ এ বক্তব্যে আমরা প্রথমবার কোনো সরকার প্রধানের কাছ থেকে এমন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি পেয়েছি।”
মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “স্থায়ী দুর্গামন্দির নির্মাণের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমাদের পাশে থেকেছেন। গত বছর যেমন, এবারও পূজায় দুইদিন ছুটি ঘোষণার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, “আপনার নেতৃত্বে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নতুন মানদণ্ড স্থাপন হয়েছে। মিথ্যা প্রচারণা, গুজবের মধ্যেও আপনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন — আমরা এর প্রশংসা করি।”
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে একটি নতুন মন্দির নির্মাণ ও অন্য একটি মন্দিরে স্নানঘাটে সিড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “অসচ্ছল মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা এবং বিধবা ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।”
প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত সকলকে আগাম দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোনো ষড়যন্ত্র বা বিশৃঙ্খলার সুযোগ না হয়। সম্প্রীতির এই ঐতিহ্য যেন অটুট থাকে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাআনন্দ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রী শ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত, সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার।
১০৮ বার পড়া হয়েছে