শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনকে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা, কুষ্টিয়ায় হবে দাফন

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৫:০৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এক ঘণ্টা সেখানে রাখা হবে মরদেহ।
এরপর বেলা ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কুষ্টিয়ায়। ফরিদা পারভীনকে দাফন করা হবে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী—বাবা-মায়ের কবরের পাশে।
শিল্পীর মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক জানিয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শোকবার্তা দিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৬৮ সালে, তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গেয়ে গেছেন লালন, হাছন রাজা, পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের গানসহ বাংলার মাটির সুর।
‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’—এর মতো অসংখ্য কালজয়ী গান দিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তার কণ্ঠে উঠে এসেছে বাংলার আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক চেতনা। এজন্যই শ্রোতারা তাকে ভালোবেসে ডাকতেন ‘লালনকন্যা’ নামে।
ফরিদা পারভীন রেখে গেছেন তার স্বামী ও চার সন্তানকে। কিংবদন্তি এই শিল্পীর মৃত্যুতে বাংলা লোকসংগীত এক অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়ল।
১০৮ বার পড়া হয়েছে