জাকসু নির্বাচনে ভিপি স্বতন্ত্রের জিতু, জিএস শিবিরের মাজহারুল

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৪ ভোট। অপরদিকে, জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) পদে ৩ হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. মাজহারুল ইসলাম।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের বিপরীতে লড়েছেন মোট ১৭৭ জন প্রার্থী। ভিপি পদে ৯ জন এবং জিএস পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বাকি বিজয়ীরা:
সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফেরদৌস আল হাসান।
এজিএস (ছাত্রী) পদে জয়ী হয়েছেন দর্শন বিভাগের (৪৮ ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা।
অন্যান্য নির্বাচিতরা হলেন:
শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক: আবু উবায়দা উসামা (ফার্মেসি)
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক: সাফায়েত মীর (গণিত)
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক: জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি (ইংরেজি)
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: শেখ জিসান আহমেদ
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক: রায়হান উদ্দিন (উদ্ভিদবিজ্ঞান)
নাট্য সম্পাদক: রুহুল ইসলাম (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব)
ক্রীড়া সম্পাদক: মাহমুদুল হাসান কিরণ (বাংলা, ৪৮ ব্যাচ)
সহ-ক্রীড়া (ছাত্র): মাহাদী হাসান (মাইক্রোবায়োলজি)
সহ-ক্রীড়া (ছাত্রী): ফারহানা লুবনা (গণিত)
আইটি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক: রাশেদুল ইমন লিখন (ফার্মেসি)
সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন সম্পাদক: আহসান লাবিব
সহ-সমাজসেবা (ছাত্র): তৌহিদ ইসলাম (মাইক্রোবায়োলজি)
সহ-সমাজসেবা (ছাত্রী): নিগার সুলতানা (ফার্মেসি)
স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক: হুসনী মোবারক (প্রাণিবিদ্যা)
পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক: তানভীর রহমান (পরিবেশ বিজ্ঞান)
কার্যকরী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন:
ফাবলিহা জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন, নুসরাত জাহান ইমা, হাফেজ তরিকুল ইসলাম, আবু তালহা ও মোহাম্মদ আলী চিশতী।
ভোটগ্রহণ ও গণনা প্রক্রিয়া:
গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা, যা শেষ হয় ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে।
ছাত্র হলগুলোতে ভোটার সংখ্যা:
আল বেরুনী হল: ২১০
আ ফ ম কামালউদ্দিন হল: ৩৩৩
মীর মশাররফ হোসেন হল: ৪৬৪
শহীদ সালাম-বরকত হল: ২৯৮
মওলানা ভাসানী হল: ৫১৪
১০ নম্বর হল: ৫২২
শহীদ রফিক-জব্বার হল: ৬৫০
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল: ৩৫০
২১ নম্বর হল: ৭৩৫
নজরুল হল: ৯৯২
তাজউদ্দীন আহমদ হল: ৯৪৭
ছাত্রী হলগুলোতে ভোটার সংখ্যা:
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল: ২৭৯
জাহানারা ইমাম হল: ৩৬৭
প্রীতিলতা হল: ৩৯৬
বেগম খালেদা জিয়া হল: ৪০৩
সুফিয়া কামাল হল: ৪৫৬
১৩ নম্বর হল: ৫১৯
১৫ নম্বর হল: ৫৭১
রোকেয়া হল: ৯৫৬
ফজিলাতুন্নেছা হল: ৭৯৮
তারামন বিবি হল: ৯৮৩
আবাসিক হলে অংশগ্রহণ পরিস্থিতি:
ছাত্রীদের ১০টি আবাসিক হলে ১৫০টি পদের মধ্যে ৫৯টি পদে কোনো প্রার্থী ছিলেন না। আবার ৬৭টি পদে একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ফলে মাত্র ২৪টি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১টি হলের মধ্যে ২টি হলে পুরো নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
এবারের নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের একাধিক প্রার্থীর বিজয়ে তাদের শক্ত অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতু ভিপি পদে জয়ী হলেও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে শিবিরের সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।
১০৯ বার পড়া হয়েছে