বিচার বিভাগের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান: তদন্তে হাইকোর্টের চার বিচারপতি

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১:১৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
হাইকোর্ট বিভাগের আরও চার বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিদের বিচার কার্যক্রম থেকে বিরত রেখেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বেঞ্চের বাইরে থাকা চার বিচারপতি হলেন:
বিচারপতি নাইমা হায়দার
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ
বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার
বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান
তারা গত বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে বিচার কাজ থেকে বিরত রয়েছেন। ২০ অক্টোবর, ২০২3 থেকে পুনরায় সক্রিয় হওয়া সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। এখনো তদন্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সূত্র।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মো. শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট বিভাগের মোট ১২ জন বিচারপতিকে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে আটজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাকি চারজনের তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
অন্যদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে:
পদত্যাগ করেছেন:
বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান (৩১ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন, ৭ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করা হয়)
বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন (৩০ জানুয়ারি পদত্যাগ)
স্থায়ী করা হয়নি:
অতিরিক্ত বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম
অতিরিক্ত বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন
(২০২২ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ, পুনর্নিয়োগ হয়নি)
অবসরে গেছেন:
বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান (৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩)
বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস (৩০ জানুয়ারি, ২০২৪)
অপসারিত:
বিচারপতি খিজির হায়াত (১৮ মার্চ, ২০২৪)
বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান (২১ মে, ২০২৪)
পটভূমি ও সাংবিধানিক প্রেক্ষাপট
২০১৪ সালে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে পরবর্তীতে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে আপিল বিভাগ রায়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে, যার ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবারও ওই কাউন্সিলের অধীনে চলে যায়।
১৯ অক্টোবর, ২০২৩ - প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি করে রায় দেন, যা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে কার্যকর করে তোলে।
এখন থেকে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণ বা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠলে, বিষয়টি জাতীয় সংসদ নয় বরং সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল তদন্ত ও সিদ্ধান্ত নেবে।
১০৬ বার পড়া হয়েছে