মারমা বাজারে জুম চাষিদের থেকে টোল আদায় নিয়ে বিতর্ক

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বান্দরবানের মারমা বাজারে জুমে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ওপর টোল-ট্যাক্স আদায়কে কেন্দ্র করে চাষিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার ফান্ড প্রশাসক অধ্যাপক থানজামা লুসাই সরেজমিনে পরিদর্শন করে এই আদায়কে ‘অবৈধ ও অনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের নির্দেশ দিলেও, তা উপেক্ষা করে এখনো টোল আদায় অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বাজার পরিদর্শনে গিয়ে চেয়ারম্যান স্পষ্টভাবে জানান, মারমা বাজার জেলা পরিষদের বাজার ফান্ডের আওতায় পড়ে না, ফলে সেখানে কোনো ধরনের টোল আদায়ের এখতিয়ার ইজারাদারের নেই। তিনি বলেন, “কৃষকদের কষ্টের ফসলের ওপর টোল বসানো বেআইনি। এ বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পরও বাজারে উপস্থিত কৃষকরা জানান, এখনো তাদের নিয়মিত টোল দিতে হচ্ছে। তারাছা থেকে আসা বিক্রেতা থুইনু প্রু (৫০) বলেন, “প্রতি বাজারবারে ৫০ টাকা করে দিতে হয়, আজও দিয়েছি।” বাঘমারা থেকে আসা আরেক বিক্রেতা সামাচিং মারমা (৫৫) জানান, “৪০ টাকা করে দিতে হয়। চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন না দিতে—এখন থেকে আর দেব না।”
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্স মারমা বাজারের টোল আদায়ের ইজারা পায়। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মাও সেতুং তঞ্চঙ্গ্যা এই দায়িত্ব দেন মো. আব্দুল মাবুদকে, যিনি পরে আদায়ের দায়িত্ব অর্পণ করেন চসা মং মারমা (বাবু)-র ওপর। তবে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে টোল আদায়ের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে চসা মং মারমা জানান, বাজারে কলা ছড়ার গাড়ির জন্য দেড় হাজার টাকা, শসা প্রতি মণে ২০ টাকা, শুকনা হলুদে ১২০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা, এবং আদা প্রতি মণে ৩০ টাকা করে টোল ধার্য রয়েছে।
চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই বলেন, “জুম চাষিদের ওপর এমনভাবে টোল বসানো সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিদর্শনের সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী পরাক্রম চাকমা, ডা. মং উষাথোয়াই, ক্য সা মং মারমা, উচো মং মারমা, চনু মং মারমা এবং নারী নেত্রী কৃপা ত্রিপুরা প্রমুখ।
১২৬ বার পড়া হয়েছে