পদত্যাগের পর সেনা হেলিকপ্টারে পালিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী ওলি

মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:২৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
নেপাল আজ ইতিহাসের অন্যতম সংকটময় সময় পার করছে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সামাজিক যোগাযোগবন্ধ, এবং ভয়াবহ বেকারত্ব ঘিরে শুরু হওয়া ‘Gen Z’ আন্দোলন উদ্দীপনা থেকে সরাসরি সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। গত দু’দিনে রাজধানী ও প্রধান শহরগুলোর রাজপথে লাখো তরুণ-যুবকের আন্দোলন সারা দেশকে স্তব্ধ করে দেয়।
৪ সেপ্টেম্বর সরকার ২৬টি প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া—Facebook, Instagram, YouTube, WhatsApp—বন্ধের ঘোষণা দিলে প্রতিবাদের ঢেউ তৈরি হয়। সরকারের “নিবন্ধন” নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার আন্দোলনেই শুরু হয় সহিংসতা। পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর অফিস, নেতা ও মন্ত্রীদের বাড়িতে বারবার আগুন লাগায় কাঠমান্ডু পরিণত হয় উত্তপ্ত রণক্ষেত্রে।
আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সংসদের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বারবার লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস, জলকামান এবং শেষপর্যন্ত সরাসরি গুলি চালায় পুলিশ। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হন, তিন শতাধিক আহত। কারফিউ অব্যাহত, সরকারি ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় স্থানীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
চরম অস্থিরতায় দেশের সেনাপ্রধান ও রাজনৈতিক নেতাকুল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের আহ্বান জানান। পরে, নিয়ম অনুসারে ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রেসিডেন্ট অফিস তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অগ্নি, সহিংসতা, এবং বিশেষ করে নিজের বাসভবনে বারবার আগুন লাগার পর ওলি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের সেনা হেলিকপ্টার দ্বারা রাজধানী ছাড়ার গোপন ও দ্রুত ব্যবস্থা করা হয়। কাঠমান্ডু পোস্ট, আনন্দবাজার, NDTV, India Today, এবং BusinessJournal24-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ওলিকে সেনা হেলিকপ্টারে করে রাজধানী থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মূলত পাঁচটি সেনা হেলিকপ্টারে একে একে রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, এবং তাদের পরিবারকে রাজধানী থেকে বের করে আনা হয়। প্রধানমন্ত্রী ওলি চিকিৎসা ছাড়াও ব্যক্তিগত কারণে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন—হিমালয়া এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে, সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, এবং বিভিন্ন মন্ত্রীর বাড়ি বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে। বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ—কোনো ফ্লাইট চালু নেই, ফলে দেশজুড়ে যোগাযোগ অচল। নেপাল এখন নেতৃত্বহীন, গভীর সংকটে। সরকার গঠনের জন্য নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের চেষ্টা চলছে; গণ-আন্দোলন অব্যাহত, তরুণ সমাজের ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া সংঘাতকে আরো বাড়িয়ে তুলছে।
১০৬ বার পড়া হয়েছে