মতিউরের গোপন বৈঠক: পুলিশের ১১ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত

রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
‘ছাগল-কাণ্ডে’ আলোচনায় আসা এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে যাত্রাবিরতির সুযোগে ‘গোপন বৈঠক’ করার সুযোগ করে দেওয়ায় এক এসআইসহ ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন—এসআই আবুল কাশেম এবং কনস্টেবল মনিরুজ্জামান, কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভির রহমান, আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তারা সবাই কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন।
গত ১২ আগস্ট দুর্নীতির এক মামলার শুনানিতে অংশ নিতে এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে ফেরার পথে পুলিশের একটি দল তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
পথে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগর এলাকায় অবস্থিত ‘নিরালা হাড্ডি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে’ গাড়িটি দীর্ঘ সময় যাত্রাবিরতি করে। অভিযোগ ওঠে, এসময় রেস্তোরাঁর একটি কেবিনে মতিউর রহমান এক ব্যক্তির সঙ্গে ‘গোপন বৈঠক’ করেন। আর সেই সুযোগ করে দেয় পুলিশের স্কর্ট টিম।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের নজরে এলে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এর নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা মতিউর রহমানকে আলাদা কক্ষে নিয়ে খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন, যা স্কর্ট ডিউটির শৃঙ্খলার পরিপন্থি।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হাজতিকে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে উৎকোচ গ্রহণ করেছেন বলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আরও গভীর তদন্ত চলমান।
অফিস আদেশে জানানো হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অসদাচরণ এবং পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল, ১৯৪৩-এর প্রবিধান ৮৮০ অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকালীন সময়ে তারা বেতন-ভাতা প্রাপ্য থাকলেও পুলিশ লাইন্সে সাদা পোশাকে নিয়মিত রোলকল, পিটি ও প্যারেডে উপস্থিত থাকতে হবে।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জুলকারনাইন সায়ের। ভিডিওতে রেস্তোরাঁর সামনে মতিউরকে পুলিশের প্রহরায় দেখা যায় এবং সঙ্গে থাকা গাড়িটিও চিহ্নিত করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জনমনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, কোরবানির ঈদের আগে ছেলেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে দেওয়ার ঘটনায় মতিউর রহমান আলোচনায় আসেন। ঘটনার পর দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ও তার স্ত্রী গ্রেফতার হন।
১০৭ বার পড়া হয়েছে