ঢাকার জলাশয় রক্ষায় একতাবদ্ধতা জরুরি: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০৯ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকাকে টিকিয়ে রাখতে হলে নগরীর জলাধার ও জলাশয়গুলো রক্ষা করতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, “ঢাকার খাল ও পুকুর উদ্ধারের উদ্যোগ ইতোমধ্যে সুফল দিতে শুরু করেছে। এবারের বর্ষায় জলাবদ্ধতা তুলনামূলক কম ছিল। জলাশয় রক্ষা ছাড়া ঢাকা রক্ষা সম্ভব নয়।”
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম-বাংলাদেশ (UDJFB) আয়োজিত ‘ঢাকার জলাধার পুনরুদ্ধার: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক নগর সংলাপ এবং ‘বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ঢাকার ৪০টি পুকুর পুনরুদ্ধারে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা, সামাজিক ঐক্য ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমেই জলাধার রক্ষা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন রিজওয়ানা হাসান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি মতিন আবদুল্লাহ, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, ইউএনডিপির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইয়ুগেশ প্রাধানাং, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন হাসান, ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান, প্রকৌশলী মো. নুরুল্লাহ, সাংবাদিক মো. হেলিমুল আলম ও অমিতোষ পাল প্রমুখ।
ড্যাপ নিয়ে মতামত
রিজওয়ানা হাসান জানান, বর্তমান সংশোধিত ড্যাপে “সাধারণ জলাধার” নামে কোনো বিভাগ থাকবে না, সব জলাশয়কেই জলাধার হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কোনোভাবেই এসব ভরাট বা দখলযোগ্য নয়। তিনি জানান, হাওর সুরক্ষা আদেশও চূড়ান্ত করা হয়েছে, যেখানে কৃষিকাজ ও হাউজবোট পরিচালনার নিয়মাবলি নির্ধারণ করা হয়েছে।
মূল প্রবন্ধে নগরায়নের চ্যালেঞ্জ
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন বলেন, “ঢাকার খাল ও জলাধার রক্ষায় রাজউক ও সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। কিছু এলাকায় সাফল্যও এসেছে, তবে রাজনৈতিক প্রভাব, পরিকল্পনার দুর্বলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়হীনতা এখনো বড় বাধা।”
অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “রাজউকের কাছেই ঢাকার জলাধার ও পুকুরের সঠিক তালিকা নেই। জিআইএস ম্যাপ ব্যবহার করে তালিকা প্রস্তুত করে তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।”
স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান মন্তব্য করেন, “ড্যাপ হাউজিং কোম্পানিগুলোর হাতে ঢাকার আশপাশের প্রায় ৮০০ বর্গকিলোমিটার তুলে দিচ্ছে। এটি অপরিকল্পিত নগরায়নকে উৎসাহিত করছে।”
সাংবাদিকদের পুরস্কার প্রদান
অনুষ্ঠানে ‘বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’-এ পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ছয় জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়:
নগর পরিকল্পনা: মো. জাহিদুল ইসলাম (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড)
সেবা ও জনদুর্ভোগ: রাহাত হোসাইন (প্রতিদিনের বাংলাদেশ)
দুর্নীতি ও অনিয়ম: রাশিদুল হাসান (ডেইলি সান)
টেলিভিশন রিপোর্টিং: কেফায়েতুল্লাহ চৌধুরী শাকিল (বাংলাভিশন) ও দেলোয়ার হোসাইন দোলন (এখন টিভি)
অনুসন্ধানী রিপোর্টিং: নাজমুল সাঈদ (ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি)
১০৭ বার পড়া হয়েছে