সর্বশেষ

সারাদেশ

গোয়ালন্দে দরবার শরিফে হামলা: সংঘর্ষে খাদেম নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২:১৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রাসেল মোল্লা (২৮) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর শুরু হওয়া এই সহিংসতায় অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহত রাসেল মোল্লা গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপচা এলাকার বাসিন্দা। তিনি দরবার শরিফের খাদেম ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শরিফ ইসলাম এবং ফরিদপুর মেডিকেলের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান।

নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা দীর্ঘদিন ধরে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের বাড়িতে দরবার শরিফ পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হলে ভক্তরা তাঁর লাশ মাটি থেকে কিছুটা উঁচু করে বিশেষ কায়দায় দাফন করেন। এ নিয়ে স্থানীয় আলেম সমাজ ও ‘উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ শরিয়ত পরিপন্থী দাফনের অভিযোগ তুলে কবর নিচু করার দাবি জানায়।

দফায় দফায় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় কমিটি শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা দরবার শরিফে হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, আনসার ক্লাব মাঠে সমাবেশ চলাকালে একদল লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি ও শাবলসহ লোকজন দরবার শরিফের দিকে অগ্রসর হয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলা হামলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।

হামলাকারীরা দরবারে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে, মালামাল লুটপাট করে এবং একপর্যায়ে দরবারের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল হকের কবর খুঁড়ে তাঁর লাশ বের করে সড়কে এনে পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় পুলিশ, র‍্যাব ও প্রশাসনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়।

সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন, যাদের মধ্যে পুলিশের ছয় সদস্যও রয়েছেন। হামলাকারীরা দুটি পুলিশ গাড়ি ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে।

রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি, তবে নিশ্চিত নয়।”


নুরাল পাগলার ছেলে মেহেদী নূর জিলানী জানিয়েছেন, তাঁর বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী কবর কিছুটা উঁচু করে দেওয়া হয়েছিল, যা ইসলামী বিধান অনুযায়ীই ছিল বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, কবর নিচু করার বিষয়ে ভক্তদের সঙ্গে আলোচনা চলছিল, কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে “মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে”।

১০৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন