আনুষ্ঠানিকভাবে ফাইভ জি যাত্রা শুরু, গ্রাহক সুবিধা কি

বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ মোবাইল যোগাযোগ প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগে প্রবেশ করলো।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশের দুই প্রধান মোবাইল অপারেটর—গ্রামীণফোন ও রবি—একযোগে দেশের সকল বিভাগীয় শহরে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি বা ফাইভ জি চালু করেছে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান এক ভিডিও বার্তায় জানান, তারাই প্রথম অপারেটর হিসেবে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ফাইভ জি চালু করেছে। একই দিন, এক অনুষ্ঠানে রবি তাদের ফাইভ জি সেবা চালুর ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে প্রায় ২০ কোটি মোবাইল গ্রাহক রয়েছে। ফলে ফাইভ জি প্রযুক্তি চালুর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক নতুন প্রযুক্তির আওতায় এসেছে।
কি সুবিধা দেবে ফাইভ জি প্রযুক্তি?
ফাইভ জি (5G) হলো মোবাইল ইন্টারনেটের পঞ্চম প্রজন্ম, যা আগের প্রযুক্তিগুলোর তুলনায় অনেক বেশি গতি, স্থিতিশীলতা এবং সংযোগ সক্ষমতা প্রদান করে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক বেশি ডেটা খুব অল্প সময়ে আদান-প্রদান সম্ভব। একই সঙ্গে অধিক সংখ্যক ডিভাইস একসঙ্গে সংযুক্ত থেকেও নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সাধারণ গ্রাহক ফাইভ জি ব্যবহারের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনের অন্তত ৮-১০টি ক্ষেত্রে সরাসরি উপকার পাবেন। নিচে ফাইভ জির কিছু প্রধান সুবিধা তুলে ধরা হলো:
১. উচ্চগতির ইন্টারনেট ও গেমিং অভিজ্ঞতা
ফাইভ জির সবচেয়ে তাৎক্ষণিক সুবিধা হলো আল্ট্রা-ফাস্ট ইন্টারনেট। এতে করে হাই রেজোলিউশনের ভিডিও স্ট্রিমিং, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) গেমিং ও লাইভ ইভেন্ট দেখা আরও সহজ হবে। লো ল্যাটেন্সির কারণে গেমিং ও রিয়েল টাইম ভিডিও কনফারেন্সিং হবে আরও ঝামেলামুক্ত।
২. শিক্ষা খাতে ডিজিটাল রূপান্তর
ফাইভ জি প্রযুক্তি ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, অনলাইন এক্সপেরিমেন্ট ও ৩৬০-ডিগ্রি ভিডিও লেকচারের সুযোগকে সহজতর করে তুলবে। শিক্ষার্থীরা আরও ইন্টারঅ্যাকটিভ ও বাস্তবসম্মত শেখার সুযোগ পাবে।
৩. স্বাস্থ্যসেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন
টেলিমেডিসিন, রোবটিক সার্জারি ও এআই-ভিত্তিক রোগ নির্ণয়ে ফাইভ জি একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। গ্রামীণ অঞ্চলেও উচ্চমানের চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে।
৪. শিল্প ও কৃষিতে আধুনিকতা
ফাইভ জির মাধ্যমে কারখানায় রোবট ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর ও দ্রুত হবে। কৃষিতে ড্রোনের মাধ্যমে জমির নজরদারি, কীটনাশক ছিটানো ও ফলনের পূর্বাভাস প্রদান সম্ভব হবে।
৫. স্মার্ট ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা
ফাইভ জি প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকার মতো শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণে ‘স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম’ চালু করা সম্ভব। আইওটি (IoT)-ভিত্তিক সিস্টেম ব্যবহার করে সিসিটিভি নজরদারি ও গণপরিবহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
৬. ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে নিরাপত্তা ও গতি
রিয়েল টাইম লেনদেন, দ্রুত ডেটা প্রসেসিং ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ব্যাংকিং খাতে প্রতারণা শনাক্তকরণ ও দ্রুত গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা যাবে।
৭. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়ক প্রযুক্তি
বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হওয়ায় ভূমিকম্প, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় রিয়েল-টাইম ডেটা ব্যবহারে অ্যালার্ট পাঠানো ও ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হবে ফাইভ জির মাধ্যমে।
১৪৬ বার পড়া হয়েছে