সর্বশেষ

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নে সরকারের ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির তালিকায় ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতাদের স্ত্রী ও স্বজনদের নামে কার্ড বরাদ্দ দিয়ে প্রকৃত দুঃস্থ নারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

সরকারের এই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে একজন নারী ৩০ কেজি চালসহ প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ ও অন্যান্য আর্থ-সামাজিক সহায়তা পান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য আমবাড়ীয়া ইউনিয়নে ৯৭ জন উপকারভোগী নারীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তবে এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন মুকুল সাইফুলের স্ত্রী, একাধিক মেম্বরের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের আত্মীয়স্বজন।

তালিকার ৬০ নম্বরে রয়েছে চেয়ারম্যানের স্ত্রী মোছাঃ আঞ্জুমান আরা স্বপ্নার নাম, যেখানে অভিভাবকের স্থানে দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের ভাই আবুল কালাম আজাদের নাম। এ ছাড়া ১, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তিন মেম্বার—সোহেল রানা লিটন, মিনাজুল ইসলাম এবং দাউদ আলী—তাদের স্ত্রীর নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের স্ত্রীদের নামও তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ বকুল আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে তালিকাভুক্তির জন্য প্রতি নারীর কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হয়েছে। অভিযোগে ৮৭ জন নারীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

প্রকৃত দুঃস্থ নারীদের বাদ দিয়ে প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যদের কার্ড প্রদান এবং অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগে গোটা ইউনিয়নে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন মুকুল সাইফুল বলেন, “আমার স্ত্রীর নাম অনেকে অনুরোধের প্রেক্ষিতে তালিকায় দেওয়া হয়েছিল। আমি ইউএনও অফিসে মৌখিকভাবে সংশোধনের অনুরোধ করেছি এবং এখনো চাল উত্তোলন করিনি।” তিনি আরও বলেন, “অনলাইনে আবেদন ও যাচাই-বাছাইয়ে কিছু ভুল হয়েছে। তবে ইচ্ছাকৃত কিছু করা হয়নি।”

তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন

 

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নাজমুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে প্রধান করে এ কমিটি ১১ জন স্বচ্ছল নারীর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি যাচাই করছে। তিনি বলেন, “তদন্তে যদি প্রমাণ হয় ইউপি চেয়ারম্যান বা সংশ্লিষ্টরা ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্নীতি করেছেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এলাকাবাসী বলছেন, এই কর্মসূচি গরীব, একাকী, কর্মক্ষমতাহীন নারীদের জন্য। সেখানে প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নারীদের অন্তর্ভুক্তি প্রমাণ করে দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র। অবিলম্বে প্রকৃত দুঃস্থ নারীদের অধিকার নিশ্চিত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

১৫১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন