সর্বশেষ

অর্থনীতি

বন্ধ ১৬টি পাট ও বস্ত্রকল দ্রুত ইজারা দিতে চায় সরকার

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫ ৪:৫৭ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
দেশে বন্ধ হয়ে পড়া ১৬টি পাট ও বস্ত্রকল দ্রুত ইজারা বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তির আওতায় বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া জোরদার করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) ৭টি পাটকল এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) অধীনে থাকা ৯টি বস্ত্রকল।

স্বাধীনতার পর সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা দেড় শতাধিক পাট ও বস্ত্রকল দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে পড়ে। বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে একে একে বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ কলকারখানা।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এসব বন্ধ কারখানা ইজারা বা পিপিপির মাধ্যমে বেসরকারি খাতে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যদিও সে উদ্যোগে গতি ছিল ধীর। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এসব প্রতিষ্ঠান হস্তান্তরের লক্ষ্যে কার্যক্রম ত্বরান্বিত করেছে।

বিজেএমসির ২৫টি মিলের মধ্যে ইজারা সম্পন্ন ১৩টিতে
২০২০ সালের ১ জুলাই বিজেএমসি তার অধীনস্থ ২৫টি পাটকলের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে একটি মিল পুনঃগ্রহণ করে সংস্থাটির অধীনে বর্তমানে ২৬টি মিল রয়েছে। এর মধ্যে একটি (জুটো ফাইবার গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ) বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ঢাকাই মসলিন প্রকল্পের জন্য।

আইনগত জটিলতা এবং জমি সংক্রান্ত বিশেষ পরিস্থিতির কারণে পাঁচটি মিল ইজারার বাইরে থাকলেও নির্বাচিত ২০টি মিলের মধ্যে ১৩টি ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭টি মিল এখনো ইজারার অপেক্ষায়।

ইজারায় দেওয়া মিলগুলোর মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশ জুট মিল, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, দৌলতপুর জুট মিল, গুল আহমদ জুট মিল, ইউএমসি জুট মিল, হাফিজ জুট মিলসহ অন্যান্য। আরও তিনটি মিলের প্রস্তাব বর্তমানে ওয়ার্কিং কমিটিতে মূল্যায়নের অপেক্ষায় রয়েছে, এবং তিনটির ইজারা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।

বিটিএমসির ২৫টির মধ্যে ৭টি ইজারায়, প্রক্রিয়াধীন আরও ২টি
বিটিএমসি’র অধীনস্থ ২৫টি বস্ত্রকলের মধ্যে শুরুতে ১৬টি মিল পিপিপিতে পরিচালনার সিদ্ধান্ত থাকলেও পরবর্তীতে ইজারাও বিকল্প পথ হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়। এ পর্যন্ত সাতটি মিল বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল, ভালিকা উলেন মিলস (চট্টগ্রাম), সিলেট টেক্সটাইল মিলসহ আরও কয়েকটি।

ফেনীর দোস্ত টেক্সটাইল ও খুলনা টেক্সটাইল মিল বর্তমানে ইজারার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। আগ্রহী বিনিয়োগকারী পাওয়া গেলে আরও নয়টি মিল বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

এই ৯টি মিল হলো: বেঙ্গল, সুন্দরবন, দারোয়ানী, আমিন, রাঙ্গামাটি, মাগুরা, টাঙ্গাইল কটন, দোস্ত (ফেনী) ও দিনাজপুর টেক্সটাইল মিল।

বিদেশি বিনিয়োগেও আগ্রহ
পাট ও বস্ত্রখাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পাকিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে সংক্ষিপ্ত বিনিয়োগ প্রস্তাবও পাঠিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

‘রাজনৈতিক নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত’
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এখন আর রাজনৈতিক বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। যারা যোগ্য, তারা বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। এসব বন্ধ মিল নতুনভাবে চালু হলে কর্মসংস্থান হবে, দেশ লাভবান হবে।’

মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, ‘বেসরকারিখাতে হস্তান্তর একটি চলমান প্রক্রিয়া। আগ্রহী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি যাতে মিলগুলো যথাযথ বিনিয়োগ পায় এবং আবারও উৎপাদনে ফিরে আসতে পারে।’

১২৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন