জুলাইয়ে ভুয়া তথ্যের অধিকাংশই রাজনীতিকেন্দ্রিক: সিজিএস

বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ ৮:১৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে মোট ২৯৬টি ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ২২০টিই ছিল রাজনৈতিক বিষয়ক।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় সিজিএস। প্রতিষ্ঠানটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় এই ধরনের তথ্য জনমত প্রভাবিত করতে সক্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসে শনাক্তকৃত ভুয়া তথ্যগুলোর মধ্যে রাজনীতি ছাড়াও অনলাইন হোক্স ছিল ২৮টি, বিনোদনভিত্তিক বিভ্রান্তিকর তথ্য ২১টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১৩টি, অর্থনীতি সংক্রান্ত ৬টি, কূটনীতি বিষয়ক ৫টি এবং পরিবেশ সংক্রান্ত ৩টি।
তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুন মাসের তুলনায় জুলাইয়ে ভুয়া তথ্য কিছুটা কমেছে। গত জুনে সিজিএস ৩২৪টি মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করলেও জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ২৯৬-এ। তবে উভয় মাসেই ভুয়া তথ্যের অধিকাংশই ছিল রাজনৈতিক, যেখানে জুনে এর হার ছিল ৭৮ শতাংশ (২৫৩টি), আর জুলাইয়ে তা হয় ৭৪ শতাংশ (২২০টি)।
ভুয়া তথ্যের লক্ষ্যবস্তু বিশ্লেষণ করে সিজিএস জানায়, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব (৬৬টি)। এরপর রয়েছে রাজনৈতিক দল (৬৫টি), আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (৪১টি), সেলিব্রিটি (২৩টি), ধর্ম (১২টি), সরকারি প্রতিষ্ঠান (১৩টি), অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (১০টি), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (৩টি) এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব (২টি)। এছাড়া, ৬১টি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছিল অনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে, যা সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে ছড়ানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ২৯৬টি ঘটনার মধ্যে ২৮৯টি ঘটেছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস ও এক্স (পূর্বের টুইটার) প্ল্যাটফর্মে। বাকিগুলো ছড়ানো হয়েছে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে।
এই গবেষণার সব তথ্য ও মাসিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বাংলাদেশের প্রথম ভুয়া তথ্য ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট www.factcheckinghub.com-এ।
প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সিজিএস প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান বলেন, “জুলাইয়ের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর মাত্রা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।” তিনি এ সমস্যা মোকাবেলায় সরকার ও সব রাজনৈতিক দলকে একযোগে এবং আলাদাভাবে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
১১৬ বার পড়া হয়েছে