ডাকসু নির্বাচন ঘিরে জমজমাট প্রচার, চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ ৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদে লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, আর ১৮টি হল সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১,০৩৫ জন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে এবং ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার চালাতে পারবেন।
ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে জমজমাট প্রচার অভিযান। পোস্টার, ব্যানার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়সহ বিভিন্নভাবে নিজেদের পক্ষে সাড়া জাগানোর চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনি উত্তাপের মধ্যেও একধরনের বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
অসম প্রতিযোগিতায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, বড় ছাত্রসংগঠনগুলোর মতো আর্থিক সাপোর্ট, গণসংযোগে জনবল কিংবা মিডিয়ার কাভারেজ তাদের হাতে নেই। এ বিষয়ে ‘ডিউ ফার্স্ট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ বলেন, "সংগঠনের প্রার্থীরা দলীয় জনবল, লজিস্টিক সুবিধা এবং মিডিয়া কাভারেজে এগিয়ে। আমরা যারা মাঠপর্যায়ে একটিভিজম করে পরিচিতি গড়েছি, এখন নির্বাচনে পিছিয়ে যাচ্ছি।"
একই অভিযোগ 'স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য' প্যানেলের জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়ারও। তিনি বলেন, "মিডিয়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ। নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থী ও সংগঠনের প্রচারণাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।"
কেন্দ্র বাড়ানোর দাবি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে অব্যবস্থাপনার অভিযোগও তুলেছে বিভিন্ন পক্ষ। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের জন্য মাত্র ৮টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে যথাযথভাবে ভোটগ্রহণ সম্ভব নয়। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম বলেন, “প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ৪-৫ হাজার। এতে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে।”
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু গ্রুপে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে এসব গ্রুপ বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আচরণবিধি মানা হচ্ছে না, প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের অভিযোগ করেন, "নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি দিলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। একপক্ষকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।"
ভিপি প্রার্থী কারাগারে
এদিকে ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ জালালকে সহপাঠীকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৬ আগস্ট রাতে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে রুমমেটকে মারধর করেন জালাল। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভোটের দিন ঘনিয়ে আসছে, চ্যালেঞ্জ বাড়ছে
প্রচার-প্রচারণা ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ভোটের লড়াই দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া সমান সুযোগ নিশ্চিত করা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
১২৭ বার পড়া হয়েছে