সর্বশেষ

মতামত

বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন যুগ: J-10C যুদ্ধবিমান ক্রয়ের তাৎপর্য ও প্রেক্ষাপট

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ ২:২০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি চীনের কাছ থেকে ১২টি অত্যাধুনিক J-10C যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় নেমেছে।

এই পদক্ষেপ কেবল দেশের আকাশসীমা রক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করছে না, বরং সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা এবং সামরিক প্রতিযোগিতার প্রেক্ষিতে একটি কৌশলগত মাইলফলক হয়ে উঠেছে।

কেন প্রয়োজন J-10C?
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অধিকাংশ ফাইলট বর্তমানে সত্তর দশকের পুরোনো J-7 সিরিজের বিমান এবং সীমিত সামরিক সক্ষমতা নিয়েই ছিল। আধুনিক যুদ্ধ কৌশলে দ্রুততা, বহুমুখী আক্রমণ, এবং উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। J-10C বিমানটি ৪.৫ জেনারেশন মাল্টিরোল ফাইটার—যাতে রয়েছে আধুনিক AESA রাডার, স্টিলথ ডিজাইন, এবং অতি দীর্ঘ পাল্লার PL-15E মিসাইল ক্ষমতা, যা অঞ্চলের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী যুদ্ধবিমানের তুলনায় অনেক এগিয়ে।

নিরাপত্তা সংকট ও আঞ্চলিক অবস্থা
সম্প্রতি আরাকান আর্মি বাংলাদেশের জলসীমায় জেলেদের অপহরণ করেছে, মিয়ানমার সীমান্তে এখনো অস্থিরতা বিরাজ করছে। ভারতের রাফাল সংগ্রহ এবং পাকিস্তানের J-10C ক্রয়ের পর আঞ্চলিক শক্তির তুলনামূলক ভারসাম্য রক্ষায় বাংলাদেশের আধুনিকীকরণ খুবই সময়োপযোগী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। চীনের সঙ্গে এ চুক্তি বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে শক্তিশালী বন্ধু ও প্রযুক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

J-10C: প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ
AESA রাডার, উন্নত অ্যাভিওনিক্স, এবং স্টিলথ প্রযুক্তির কারণে J-10C আকাশ থেকে ভূমি ও আকাশ থেকে আকাশ অভিযানে পারদর্শী।
PL-15E BVR (Beyond Visual Range) মিসাইল—দেরাদুনের বহুদূরে থেকেই শত্রু বিমানকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
AWACS সমর্থনে, সমন্বিত অপারেশনে পুরো অঞ্চলে নজরদারি ও টার্গেটিং সম্ভব।
একাধিক মাল্টিরোল মিশনে একসঙ্গে অংশ নিতে পারে; বিমানঘাঁটি, রাডার, নৌবাহিনী লক্ষ্যবস্তু আক্রমণ করতে সক্ষম।

সামরিক ও ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্য
J-10C সংগ্রহের ফলে বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতায় গুনগত পরিবর্তন আসবে, দেশের স্বাধীন আকাশসীমা সুরক্ষার পাশাপাশি আঞ্চলিক ক্ষমতার সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় এটি মার্কিন প্রভাব ও চীনা সম্পৃক্ততার ভারসাম্য রক্ষার নতুন দিকনির্দেশনা দিবে।

সারসংক্ষেপ
যুদ্ধবিমান আধুনিকায়নের এই পদক্ষেপ সীমারক্ষী, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী ও আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ। কৌশলগত বন্ধুত্ব, সমসাময়িক অস্ত্রশস্ত্র ও প্রযুক্তিগত সমন্বয় দেশের প্রতিরক্ষার নতুন যুগের সূচনা করছে।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট

১২৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন