গজারিয়ার চরাঞ্চলে নৌ ডাকাত দলের হামলা, পুলিশের প্রতিরোধে গোলাগুলি

সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ ৫:৩১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে সম্প্রতি নতুনভাবে চালু হওয়া পুলিশ ক্যাম্পের ওপর নৌ ডাকাত দলের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ, দুষ্কৃতকারীরা অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে গুলি ও বিস্ফোরক নিক্ষেপ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালিয়ে হামলাকারীদের প্রতিরোধ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র বলছে, সোমবার সন্ধ্যার পরে গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুরের মেঘনা নদীর তীরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের সদস্যরা দ্রুতগতির ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ব্যবহার করে নদীতে মহড়া দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের উপস্থিতি বুঝে অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে, দুষ্কৃতকারীরা আড়াল হয়ে যায়। কিছু সময় পর, মোটা হেলমেট পরা কিছু ডাকাত এসে ক্যাম্পের দিকে হামলা চালায়। তারা অস্ত্র, ককটেল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে গুলি ও বিস্ফোরক ছোড়ে। পুলিশ পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে। গোলাগুলির সময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০০টির বেশি গুলি বিনিময় হয়।
গোলাগুলির পর দুষ্কৃতকারীরা ট্রলার দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানায়, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালুব্যবসা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের অপপ্রয়োগের ঘটনা ঘটছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে নয়ন, পিয়াস, রিপন ও লালু বাহিনী। এক বছরেও এদের বিরুদ্ধে কয়েকটি গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনেকের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। সম্প্রতি, এ ধরনের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়, যাতে এসব অপরাধ দমন করা যায়।
পুলিশের বরাত দিয়ে গজারিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “আমাদের ওপর হামলা করে দুষ্কৃতকারীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্র সহ অর্ধশতাধিক সদস্য নিয়ে হামলা চালায়। তারা অস্ত্রগুলো থানাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি করেছে। হামলায় আমাদের ১৯টি গুলি লক্ষ্য করে। তবে আমাদের কেউ আহত হয়নি। অন্য কেউ আহত কি না, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”
স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাত দলের ভয়ে অনেক এলাকাবাসী মুখ খুলতে চান না। তারা ভয় পান, এই দুষ্কৃতকারীরা তাদের ওপর ভয় দেখিয়ে বা হামলা চালিয়ে পুলিশ ক্যাম্প বন্ধ করে দিতে পারে। তবে পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ার পর অনেকেই আবার ফিরে আসছেন। পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে ডাকাত দলের কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে, এদের শক্তি খুব বেশি, আর কখনো বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম বলেন, “পুলিশ ক্যাম্প চালুর পর থেকে নৌ ডাকাতরা আর সুবিধা করতে পারছে না। তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত। তবে আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, পুলিশ তাদের পাশে রয়েছে। অপরাধীদের কঠোরভাবে দমন করে অপরাধ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে।”
২৯১ বার পড়া হয়েছে