বিএনপি'র দুই পক্ষের বিবাদ, গায়ে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ ফারহানার

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ২:০৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষের সময় দলটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এই শুনানি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথমেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসন ঘিরে পক্ষে-বিপক্ষে জমা দেওয়া আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
শুনানিকালে বিএনপির রুমিন ফারহানা খসড়া সীমানা পরিবর্তনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। বিপরীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির অপর একটি অংশের নেতারা — খুরশিদ আলম, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম ও অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেনসহ অনেকে — খসড়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন (বুধন্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করায় উপজেলার অখণ্ডতা নষ্ট হচ্ছে।
এই মতবিরোধ থেকেই শুনানির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়, যা দ্রুতই হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসি কর্মকর্তারা ও পুলিশ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করেন। পরে নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ উভয় পক্ষকে মিলনায়তন ত্যাগ করার অনুরোধ জানান।
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, "যেটা ১৫ বছরে হয়নি, সেটা আজ হয়েছে। আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি যে দলের জন্য ১৫ বছর লড়েছি, সেখানকার নেতাকর্মীরাই আজ আমাকে ধাক্কা দেয়। নির্বাচনের আগে যদি এমন পরিস্থিতি হয়, নির্বাচনের সময় কী হবে তা সহজেই অনুমেয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমি একজন আইনজীবী, তাই নিজের কেস নিজেই প্রেজেন্ট করেছি। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী ও তার অনুসারীরা ২০-২৫ জন মিলে গুণ্ডামি করেছেন। এটা নির্বাচন কমিশনের সম্মান ও গাম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।"
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। এনসিপি নেতা প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী দাবি করেন, "আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবির পক্ষে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু রুমিন ফারহানার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনেই আমাদের মারধর করা হয়েছে।"
এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "তারা আসলে এনসিপি-জামায়াত ছিল, নাকি গুণ্ডা-মাস্তান ছিল, সেটা আমরা বুঝতে পারিনি।"
শুনানির সময় নির্বাচন ভবনের বাইরেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় এবং ভবনের সামনে জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়।
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে