তিন তালাকের পর পুনরায় বিয়ে, সমাজচ্যুতি ও হামলায় হাত ভাঙা

বৃহস্পতিবার , ২১ আগস্ট, ২০২৫ ৯:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তিন তালাক দেওয়ার পর একই স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করায় সমাজচ্যুত হন এক দিনমজুর।
এরপর গ্রাম্য মাতব্বরদের রোষানলে পড়ে মারধরের শিকার হয়ে হাত ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে।
ঘটনাটি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামের। ভুক্তভোগী দিনমজুরের নাম আবদুল জলিল প্রামাণিক। প্রায় দেড় বছর আগে রাগের মাথায় স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তালাক দেন জলিল। ২৯ দিন পর আবার একই স্ত্রীকে বিয়ে করেন তিনি। এ ঘটনা মেনে নেয়নি গ্রামের প্রভাবশালী মাতব্বরেরা। তাঁদের দাবি, হিল্লা বিয়ে ছাড়া এ বিয়ে বৈধ নয়। এর জেরে জলিল ও তাঁর পরিবারকে সমাজচ্যুত করেন তাঁরা।
জানা গেছে, সমাজচ্যুত অবস্থায় জলিলকে গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে দেওয়া হয়নি, জানাজায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয় এমনকি দিনমজুর হিসেবেও কাজ করতে পারেননি তিনি। জলিল বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে জানালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রশীদ মণ্ডলকে সমাধানের দায়িত্ব দেন ইউএনও। ইউপি চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
সবশেষ, গত ১৫ আগস্ট রাতে মসজিদে যাওয়ার পথে জলিলকে মারধর করে গ্রামের কিছু মাতব্বর। এতে তাঁর বাঁ হাত ভেঙে যায়। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে রায়কালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশীদ মণ্ডল বলেন, “সমাজচ্যুতি সংক্রান্ত বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। মারধরের ঘটনায় জলিলের হাত ভেঙে গেছে বলে জেনেছি।”
অভিযুক্তদের একজন, গ্রাম্য মাতব্বর মিল্টন খাঁ মুঠোফোনে বলেন, “জলিল সমাজবিরোধী কাজ করেছেন, তাই তাঁকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে।”
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “আবদুল জলিলের অভিযোগটি যাচাই-বাছাই করে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।”
১২১ বার পড়া হয়েছে